আজকাল ওয়েবডেস্ক: গিয়েছিলেন অন্যান্য বারের মতোই। ভরা বর্ষায় মাঝ দরিয়ায় ভেসে গিয়ে মাছ ধরতে। কাকদ্বীপ থেকে রওনা অন্যান্য বারের মতো দিলেও, বাকি ঘটনা অন্যান্য বারের মতো ঘটল না। ভারতের মৎসজীবীরা আটক বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মোংলা বন্দর থেকে তাদের আতক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের পরিবারের কাছে ফোনও এসেছে। 


কিন্তু  কেন এই আটক, কী কারণ? জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক জল সীমানা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করার অভিযোগে ভারতীয় ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করেছে বাংলাদেশের নৌ বাহিনী। অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের কাছে ভারতীয় জলসীমানা লঙ্ঘন করে ভারতীয় দুটি ট্রলার বাংলাদেশে প্রবেশ করে। 

আরও পড়ুন: সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি কলকাতায়, কিছুক্ষণেই আরও বাড়বে দুর্যোগ! টানা তিন দিন ৫ জেলায় ভারী বৃষ্টি, ১৫ জেলায় হলুদ সতর্কতা!

এরপরেই বাংলাদেশের নৌ বাহিনীর হাতে আটক হন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। দুটি ট্রলারের নাম এফবি ঝড় এবং এফবি মঙ্গল চন্ডী ৩৮। এগুলি পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপের ট্রলার বলে জানা গিয়েছে। কয়েকদিন আগে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে কাকদ্বীপ থেকে পাড়ি দিয়েছিল এই দুটি ট্রলার। বাংলাদেশের নৌ বাহিনী দুটি ট্রলারে থাকা মোট ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করার পাশাপাশি ইলিশ-সহ প্রায় ১০০ মন সামুদ্রিক মাছ উদ্ধার করেছে বলেও জানা গিয়েছে।

 এ বিষয়ে কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানিয়েছেন, আগে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এইসব বিষয়ে এত বেশি সক্রিয় ছিল না। ইদানিংকালেই চোখে পড়ছে এই অতি সক্রিয়তা। তাঁর কথায় উঠে এসেছে পুরনো প্রসঙ্গও। কী জানাচ্ছেন তিনি? বলছেন, ‘সম্প্রতি ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। আর ঠিক সেই কারণেই বাংলাদেশের নৌ বাহিনী অতি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মৎস্যজীবীরা আন্তর্জাতিক জলের সীমানার কাছেই মাছ ধরে থাকেন বরাবর।

 কিন্তু সম্প্রতিকালে বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী অতি সক্রিয়তার কারণে এমনই ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরানোর জন্য প্রশাসনিকভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর পাশাপাশি আর যাতে ভারতীয় কোনও মৎস্যজীবী আন্তর্জাতিক জল সীমানার কাছে মাছ না ধরেন, সেই বার্তা দিয়ে আমরা মৎস্যজীবীদের সতর্ক করছি। অতীতেও দেখা গিয়েছে বাংলাদেশী বহু মৎস্যজীবী ট্রলার আন্তর্জাতিক জল সীমানা লঙ্ঘন করে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিল। আমরা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখছি।‘

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আটক হওয়া মৎসজীবীদের পরিবারের সদস্যরা ফোন পেয়েছেন বাংলাদেশ থেকে। তাঁদের আটক হওয়ার বিষয়ে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, আটক হওয়া ওই মৎসজীবীরা সুস্থ রয়েছেন। তবে সুস্থতার খবর এলেও স্বস্তি ফিরছে না। ঘরের মানুষ ঘরে না ফেরা পর্যন্ত ঘোর আরঙ্ক তাঁদের পরিবারে। এখন অপেক্ষা কেবল ফিরে আসার। আতঙ্ক তাঁদের মনেও, যাঁদের পরিবারের লোকজন আটক পড়েননি, কিন্তু প্রায়শই সমুদ্রে যান মাছ ধরতে। কবে কী ঘটবে? ভয়ে ঘুম নেই চোখে।  

একই সঙ্গে উল্লেখ্য, আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিচারে, আগামী পাঁচদিন মৎসজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৌসম ভবন। একই সঙ্গে, হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর কারণে গাঙ্গেয় বৃষ্টির দাপট বাড়বে আগামী কয়েকদিনে। উত্তর ছত্তিসগড়ে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। পাশাপাশি পাঞ্জাব এবং উত্তর পূর্ব অসমে আরও দু’টি ঘূর্ণাবর্তের অবস্থান বর্তমানে। যার কারণে ফের দুর্যোগের ঘনঘটা বাংলায়।  নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে আবারও দুর্যোগের কালো মেঘ ঘনাচ্ছে।