আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত ৪ এপ্রিল ভোররাতে রাজ্যসভায় মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি নিয়ে আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, "নভেম্বর থেকে মণিপুরে আর কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।" কিন্তু মাটির বাস্তবতা এই বক্তব্যকে খণ্ডন করছে।

নভেম্বর ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত মণিপুরে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন সংঘর্ষে, আর ১৩ জন মারা গেছেন ত্রাণ শিবিরে, স্থানীয়দের অভিযোগ—যথাযথ চিকিৎসার অভাবে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শিশুসহ সাধারণ মানুষ, পরিযায়ী শ্রমিক, প্রতিবাদকারী এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা কর্মীরা।

রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হওয়ার পরও হিংসা অব্যাহত। নভেম্বর ১১-তে জিরিবামে একটি মেইতেই পরিবারের ৬ সদস্য নিখোঁজ হন কুকি হামলার পর। পরে তাঁদের পোড়া দেহ উদ্ধার হয় বরাক নদী থেকে। সেদিনই সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলার পাল্টা জবাবে ১১ জন সন্দেহভাজন কুকি গ্রামবাসী নিহত হন। সরকার তাঁদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বললেও কুকি-জো কাউন্সিল দাবি করেছে, তাঁরা ছিলেন গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক। এই ঘটনার প্রতিবাদে পার্বত্য এলাকায় বনধ ডাকা হয়।

ডিসেম্বরে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় এক ২০ বছর বয়সী যুবকের। কাকচিং জেলায় দুজন বিহারী কিশোর শ্রমিককেও হত্যা করা হয়।

ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতির শাসনের পর অনেকে আশার আলো দেখেছিলেন, কিন্তু ৮ মার্চ ফের সংঘর্ষে এক কুকি ব্যক্তি নিহত হন, আহত হন আরও ৪৮ জন। একই দিনে আহত হন ২৭ জন নিরাপত্তা কর্মীও।

ত্রাণ শিবিরে চলছে এক নীরব সংকট। কুকি সংগঠন ‘কুকি খাংলাই লাওমপি’ দাবি করেছে, নভেম্বর থেকে ১৩ জন বাস্তুচ্যুত মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন।

মে ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া হিংসায় এখনো পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও শিবিরে আশ্রিত। শাহ ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতি’র দাবি করলেও, মণিপুরের মাটি বলছে অন্য কথা।