আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছত্তিশগড় হাইকোর্ট রায় দিয়েছে যে, কোনও মহিলাকে কুমারীত্ব পরীক্ষার জন্য বাধ্য করা যাবে না, কারণ এটি ভারতের সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন, যা জীবনের সুরক্ষা ও স্বাধীনতা এবং মহিলাদের সম্মান বজায় রাখার অধিকার নিশ্চিত করে।
হাইকোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার ভার্মা এই পর্যবেক্ষণ দেন, যেখানে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর কুমারীত্ব পরীক্ষার দাবি জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগ করে যে তিনি বিবাহপূর্ব একটি অবৈধ সম্পর্কে ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর রায়গড় জেলার পারিবারিক আদালত ওই আবেদন খারিজ করেছিল, যা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বামী হাইকোর্টে আবেদন করেন।
হাইকোর্ট জানায়, "কোনও মহিলাকে কুমারীত্ব পরীক্ষার জন্য বাধ্য করা সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন, যা নারীদের সম্মানের অধিকার নিশ্চিত করে। এবং এটি মৌলিক অধিকারের 'হৃদয়'।"
বিচারপতি ভার্মা বলেন, কুমারীত্ব পরীক্ষা নারীদের শালীনতা ও মর্যাদার লঙ্ঘন এবং এটি কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আদালত আরও জানায়, স্বামী যদি নিজেকে 'সক্ষম' প্রমাণ করতে চান, তবে তিনি নিজেই প্রাসঙ্গিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন বা অন্য কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেন।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল হিন্দু রীতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এই দম্পতি। অভিযোগ অনুযায়ী, স্ত্রী তাঁর পরিবারের কাছে স্বামীর 'অক্ষমতার' কথা জানান এবং সহবাসে অস্বীকৃতি জানান। পরে, ২০২৪ সালের ২ জুলাই তিনি রায়গড় পারিবারিক আদালতে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS) ১৪৪ ধারায় মাসিক ₹২০,০০০ রক্ষণাবেক্ষণ দাবি করেন।
এর জবাবে স্বামী দাবি করেন, স্ত্রী তাঁর জামাইবাবুর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে ছিলেন এবং তাঁদের দাম্পত্য জীবন কখনও পূর্ণতা পায়নি। এরপর তিনি স্ত্রীর কুমারীত্ব পরীক্ষার আবেদন জানান, যা পারিবারিক আদালত খারিজ করে।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, "কুমারীত্ব পরীক্ষা অনুমোদন করা ন্যায়বিচারের মূলনীতির পরিপন্থী এবং কোনও ভাবেই এটি গ্রহণযোগ্য নয়।"
বর্তমানে মামলাটি প্রমাণ সংগ্রহের পর্যায়ে রয়েছে।
