আজকাল ওয়েবডেস্ক: শেষপর্যন্ত সেই ঘুমপাড়ানি গুলিতেই কাবু হল জিনাত। বাঁকুড়ার জঙ্গল থেকে বনকর্মীরা খাঁচাবন্দি করলেন ওই বাঘিনীকে। জিনাত সুস্থ রয়েছে বলেই জানানো হয়েছে বনদপ্তরের তরফে। তাকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
জিনাত ধরা পড়ায় বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানর্জি। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, "বাঘিনী জিনাতকে জঙ্গল থেকে নিরাপদে উদ্ধার করার জন্য বন আধিকারিকদের অভিনন্দন জানাই। এই কাজে সহায়তার জন্য আমার কুর্নিশ জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পঞ্চায়েত কর্মী ও স্থানীয়দের।"
My heartiest congratulations to the forest officials of West Bengal on the successful rescue of the tigress- Zeenat. My sincere gratitude to the district administration, police, panchayat functionaries and the local people for their invaluable support and collaboration in this… pic.twitter.com/KHJQHLhOzK
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)Tweet by @MamataOfficial
দিন আষ্টেক আগে ওডিশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে বাংলায় ঢুকে পড়েছিল এই বাঘিনী। শুরুতে ঝাড়গ্রাম, পরে পুরুলিয়ায় বাঘিনী জিনাতের অবস্থানের সন্ধান মিলেছিল। শেষে বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ে বাঘিনীটি। অবশেষে রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে জিনাতকে দেখেই ঘুমপাড়ানি গুলি মারেন বনকর্মীরা। আগে বেশ কয়েকবার ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাজ না হলেও অবশ্য এবার হয়েছে। ধরা পড়ল ওডিশার বাঘিনি জিনাত।
বার বার অবস্থান বদলানোয় রীতিমতো ল্যাজেগোবরে হচ্ছিলেন বনকর্মীরা। তবে হাল ছাড়েনি বনদপ্তর। উল্টে বাড়তি উদ্যমে বাঘিনি জিনাতকে ধরতে ঝাঁপিয়েছিলেন বনকর্মীরা।
মহারাষ্ট্রের ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জিনতকে ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরা জায়গায় রেখে জিনাতকে রেডিয়ো কলার পরিয়ে গত ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জিনাত। কয়েক দিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। বাঘিনীর অবস্থান জানার পর ভয়ে কাঁটা হয়েছিল ঝাড়গ্রামবাসী। এর কয়েকদিনের মধ্যেই অবশ্য ঝাড়গ্রাম থেকে বাঘিনীটি পৌঁছোয় পুরুলিয়ায়। সেখানে রাইকা পাহাড়ে বেশ কয়েকটা দিন কাটিয়ে জিনাত বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির জঙ্গলে চলে যায়। এর মাঝে বেশ কয়েকবার জিনাতকে ধরতে খাঁচাপাতা হয়েছিল। দেওয়া হয় মুরগি, ছাগলের, টোপও। জিনাত সেসব এড়িয়ে চলে যায়। খেয়েছিল গৃহস্থের গবাদি পশু।
শেষ মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কাছে গোঁসাইডিহির জঙ্গেলে জিনাতের অবস্থায় দেখে দ্রুত গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলা হয়। শনিবার বাঘিনী ক্যামেরাবন্দি হতেই তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তবে সে সময় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। রাতে আরও দু'বার ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়েছিল। সেগুলোও কাজে লাগেনি। শেষে রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ ফের জিনাতকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। তাতেই কাজ হয়েছে।
