শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

World Mental Health Day

World Mental Health Day: মনকে বাদ দিয়ে ভাববেন না, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে বার্তা মনস্তত্ববিদের

স্বাস্থ্য | World Mental Health Day: মনকে বাদ দিয়ে ভাববেন না, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে বার্তা মনস্তত্ববিদের

KR | ১০ অক্টোবর ২০২২ ১৯ : ১৩Rishi Sahu


রাজ্যশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, মনস্তত্ববিদ: আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ নিবন্ধ। লিখেছেন বিশিষ্ট মনোবিদ রাজ্যশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের জীবনে আনন্দ থাকলেই সব রোগ–‌ব্যাধি পালায়। কোনও রোগ না–থাকাটা সুস্থ জীবনের জন্য যে কতটা প্রয়োজন, সেটা নতুন করে বলে দিতে হবে কি?‌ কথায় বলে ‘Health is Wealth’। ‌কিন্তু ‘Health’‌ কথাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায় Mental Health‌–এর কথা না বললে।
Mental Health? সেই বস্তুটা আবার কী!‌‌ গায়ে মাখে না কি মাথায় দেয়‌? আমার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রপত্রিকায় এ বিষয়ে ‘‌সমাজ সচেতনতা’‌ গড়ে তোলার প্রয়াসে বহু অনুষ্ঠান করেছি, বহু লেখা লিখেছি। এই প্রয়াস থামালে চলবে না। মানুষকে হতে হবেই সচেতন, তার নিজের প্রয়োজনে। ১০ অক্টোবর ‘‌বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’‌। তাই আসুন জেনে নিই মানসিক স্বাস্থ্য কী, এবং তার প্রয়োজনীয়তা আমাদের জীবনে কতখানি।
বহু বছর আগে থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‌হু)‌ ‌বলে এসেছে, ২০২০‌ থেকে ডিপ্রেশন বা অবসাদ হয়ে উঠবে ‘‌মারণ রোগ’ (‌Killer Disease)‌। তখন কি কেউ জানত যে, করোনা হবে আর তার ফলে মানবজীবনে এমন ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে?‌ কত মানুষ মারা যাবে, কত শিশু হবে পিতৃ–‌মাতৃহারা, কত শ্রমিক চাকরি হারাবে, জীবনে শুধুই থাকবে হাহাকার–‌হতাশা–‌নিরানন্দ–‌দুঃখ–‌আতঙ্ক–‌উদ্বেগ?‌
করোনা–পরবর্তী সময়েও তার প্রভাব থাকবে বইকি। যদিও আমরা আবার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছি একটু একটু করে, তা–ও কি ভুলতে পারি গত কয়েক বছরের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা?‌ না, পারি না। কারণ সে সব কিছু ছাপ ফেলে গেছে আমাদের মনে।
‘মন’ কী, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না কারণ তাকে যে দেখা যায় না। মন আসলে আমাদের মস্তিষ্ক বা ব্রেন–এর মধ্যেই অবস্থিত। আর সবাই জানেন, মস্তিষ্কই আমাদের নিয়ন্ত্রণ‌ করে। এমন একটা জিনিসের নাম বলতে পারবেন, যেটা আপনার মনের বাইরে?‌ যে কোনও, যে কোনও একটা জিনিস ভাবুন যেটা আপনার ‘‌মন’কে বাদ দিয়ে?‌‌ পারবেন না। কারণ সব কিছুই জমা হয় মনের মধ্যে (‌‌Data Entry),‌ ‌মনের বাইরে এই জগতেরও (again a data)‌ ‌তাই কোনও অস্তিত্ব নেই।
আনন্দ প্রকাশ করলেও, আমরা চেপে রাখি দুঃখ–‌কষ্ট–‌ভয়ের মতো আবেগগুলিকে। আবেগ হল Energy বা শক্তি। দীর্ঘদিন এই সব শক্তি মনে চেপে রাখতে রাখতে, মন যখন তার সীমা ছাড়িয়ে ফেলে, তখন এই শক্তিই বাইরে বেরিয়ে আসে রোগের আকারে। সেটা Depression, Anxiety‌–র (Tension)‌ মতো মানসিক রোগ হতে পারে বা Hypertension‌ (‌‌উচ্চ রক্তচাপ)‌‌, Diabetes, Cardiac disease–এর মতো শারীরিক অসুখ হতে পারে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, আমাদের দেশে বিশ্বাস করা হয় medicine - Tablet, Syrup, Injection‌ ‌দিয়েই সব চিকিৎসা সম্ভব। সাধারণ মানুষকে ছেড়েই দিলাম, বেশ কিছু ডাক্তার আছেন তাঁরাও এটাই বিশ্বাস করেন। আজও। অবাক হচ্ছেন?‌ আচ্ছা বলুন তো, Migraine‌ এবং Irritable Bowel Syndrome (IBS)‌ রোগের চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি আপনারা কতজন counselling / psychotherapy‌ ‌পরিষেবা নে‌‌‌ওয়ার নির্দেশ ডাক্তারের থেকে পেয়েছেন?‌ এগুলিকে বলে Psycho-Somatic Illness‌ ‌যার কারণটা মানসিক, প্রকাশটা শারীরিক। এই তালিকায় আরও রয়েছে‌–‌ Asthma, Pain disorder, Skin rashes‌ ইত্যাদি। এমনকী বিজ্ঞান বলছে stress‌ থেকে cancer (gene mutation)‌–‌ও হয়। Psycho-Somatic Illness‌‌–‌এর চিকিৎসা যদি শুধু ওষুধ দিয়ে আপনি করতে চান তাহলে আপনাকে দীর্ঘদিন ওষুধের পর ওষুধ, দামি দামি Diagnostic Test–এর সাহায্য নিতে হবে। এর পর কিছুদিন ভাল থাকবেন। আবার মাথাচাড়া দিয়ে সেই রোগ আপনাকে কষ্ট দেবে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানসিক শেকড়টা (root of the disease)‌ ‌না ওপড়াতে পারছেন, এই রোগের হাত থেকে আপনার নিস্তার নেই।
আলোচনা দীর্ঘ করব না। কারণ এই নিয়ে বলতে হলে অনেক কিছুই বলতে হবে যা এই লেখার স্বল্প পরিসরে সম্ভব নয়। আজকাল বাচ্চা–‌বড় সব বয়সেই Suicide‌ বাড়ছে। রাগ বাড়ছে, ধৈর্য কমছে। চারদিকে অস্থিরতা। আপনি কি চান না এর থেকে বেরোতে?‌ যদি চান, তাহলে ‘‌আমি তো পাগল নই, আমি কেন counselling‌ করাব’,‌ ‘‌মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাব না, ও সব আমার দরকার নেই’‌ বলে মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন না। আপনার জীবন আপনার হাতে। আসলে ‘‌পাগল’‌ বা ‘‌mad’‌‌ ‌বলে কিছুই হয় না। সবই কারণ (cause)‌ ‌আর তার প্রকাশ (effect)‌–এর খেলা।
প্রয়োজনে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানসিক পরিষেবা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। তাহলে, তত তাড়াতাড়ি আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। সময় থাকতে নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন। জীবন একটাই। তাকে সুস্থ ও আনন্দময় করে তোলা আমাদের নিজেদের কর্তব্য, নিজেদের দায়িত্ব। আপনি কী বলেন?‌‌‌
 




বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



10 22