সোমবার ০৫ মে ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

কলকাতা | Kumartuli: পুজোর মরশুমে কুমোরটুলিতে আসেন হাজার পাঁচেক পরিযায়ী শিল্পী

Riya Patra | ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৩ : ০৮Riya Patra


রিয়া পাত্র

শীতঘুমের মতোই শীতের কটা মাস ভিড় একটু কম উত্তরের ঘিঞ্জি, ভ্যাপসা, স্যাঁতসেতে এবং আদ্যপান্ত রঙিন গলিটায়। কিন্তু ওই জৈষ্ঠ্য মাস থেকে কার্তিক মাস গোটা একটা পাড়ার সময় পেরিয়ে যায় উর্ধশ্বাসে। এই সময়টুকু ছাড়া বাকি কয়েকমাস কুমোরটুলির গলি, শাখা গলি যতটা ফাঁকা থাকে, বাকি সময়ের ছবি একেবারেই বিপরীত। ভিড়, কর্মব্যস্ততা নিয়ে কখন যে এক একটা দিন পেরিয়ে যায় ঠাওর করা যায় না। এই নির্দিষ্ট সময়ে কুমোরটুলি গেলে দেখা যাবে কোথাও প্রতিমায় রঙ করছেন বছর ৩০-এর হেমন্ত সরদার, কোথাও প্রতিমার সিঁথি কেটে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক পিঠ কালো চুল বছর ৫০-এর হারাধন পাল, কোথাও শিবের জটার জন্য লাল চুল পাকিয়ে আঠা দিচ্ছেন বিষ্ণুপদ, অন্যদিকে রাস্তার ওপর যে মূর্তি শুকোচ্ছে, তার পায়ের কাছের হাঁস, শেয়াল কিম্বা সিংহে রঙ করছেন শান্তিপুরের প্রসেনজিৎ। কুমোরটুলির গলিতে ভিজে কাদা-মাটি পায়ে নিয়ে কয়েকদিন ঘুরলেই টের পাওয়া যায়, পাল শিল্পীদের ঠাকুরের গোলায় বা কারখানায় প্রতিবছর শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, দুই চব্বিশ পরগণা, বর্ধমান সহ একাধিক জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য আসেন। ঘুপচি ঘরে দিন কাটান, সময় করে ছোট্ট হাড়িতে ভাত চড়ান, আর বাকি সময় মন দিয়ে, তিলে তিলে গড়ে তোলেন এক একটি অসামান্য প্রতিমা। পাড়ার ক্লাব, বনেদি বাড়ি পুজোর বায়না দেয় কোনও না কোনও পাল শিল্পীর কারখানায়। এই হেমন্ত-হারাধনরাই তখন হয়ে ওঠেন শিল্পীর দশহাতের এক একটি হাত। কেউ কাঠামো বানান, কেউ মাটি মাখেন, কেউ গড়ে তোলেন প্রতিমার অবয়ব, কেউ করেন রঙ, কেউ আঁকেন চোখ, কেউ পরান গয়না। হাতে হাতে প্রধান শিল্পীর দিকে এগিয়ে দেন এক এক উপকরণ। কাজ শেষে তফাতে গিয়ে দাঁড়ান, তাকিয়ে দেখেন, এবছর কতখানি শিখলেন, গড়লেন কতখানি। নিজেদের ফোনে ছবি তুলে রাখেন কেউ কেউ। হিসেব বলছে, কুমোরটুলিতে অন্তত ২০০ বা তার বেশি প্রতিমা শিল্পীর কারখানা রয়েছে। তার প্রতিটিতে অন্তত ২০ থেকে ৫০ জন করে কাজ করতে আসেন ফি বছর। কম করে ৫ হাজার, কেউ বলে সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ১০ হাজার অনায়াসে।  কথা বলা গেল তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে। গত ৫ বছর ধরে কৃষ্ণনগর থেকে আসছেন তন্ময় । তাঁর দাদা বিনয় এই বছর নিয়ে ১২ বছর ধরে আসছেন। কেন আসছেন? জীবিকা অর্জন? উত্তর অবশ্যই ‘হ্যাঁ।‘ তবে সেটাই একমাত্র নয়। ২৫ এবং ৩০ বছরের দুই ভাইয়ের কুমোরটুলিতে এসে নেশা ধরে গিয়েছে রং-তুলি-ভিজে মাটির। তাঁরা বাড়ি থেকে চলে আসেন মোটামুটি দুর্গাপুজোর মাসখানেক আগে। মাটি মাখা থেকে শুরু, ধীরে ধীরে কাঠামোয় মাটি পড়ে, শুকনো হয় প্রতিমা, কয়েক দফায় রঙ পড়ে তাতে। প্রসেনজিৎ গত ৮ বছর ধরে আসছেন কুমোরটুলিতে। আগে শুধু হাতে হাতে উপকরণ এগিয়ে দিতেন,এখন রঙ করেন। প্রসেনজিতের বাড়িতে এর আগে কেউ ঠাকুর গড়ার কাজ করেনি। তাহলে? জানা গেল, পাড়ার দাদা-ভাইয়েরা প্রতি বছর একটা বিশেষ সময়ে কুমোরটুলি আসত, তাদের সঙ্গেই একদিন জেদ করে বাড়ি থেকে চলে আসেন কুমোরটুলির এঁদো গলিতে। হাঁ করে প্রধান শিল্পীর কাজ বসে বসে দেখেছেন একটা সময়। চোখ বন্ধ করে ভেবেছেন একদিন তিনিও অনায়াসে গড়বেন প্রতিমার মুখ। এখন রঙ করার দায়িত্ব পেয়েই বর্তে গিয়েছেন। হাসিমুখে জানালেন, ‘কাজ শেখার কোনও বয়স নেই, নেই আমি শেষদিন পর্যন্ত শিখব।‘ দেখতে দেখতে ২৩ বছর হয়ে গেল। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে কুমোরটুলিতে এসে দাঁড়ান হারাধন। করোনার পর শরীর ভেঙেছে, মনেও থাকে না ইদানিং অনেক কিছু। কিন্তু কুমোরটুলির পথ ভুল হয় না কিছুতেই। বললেন, ‘রোজগারের পরিমাণ খুব বেশি নয়, তবু আমি ঠাকুর গড়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবিনি, এটাই করতে চাই।‘ প্রতি বছর এরকম হাজার হাজার মানুষ আসেন কুমোরটুলিতে, জীবিকার টানে, নেশার টানে, রং-মাটির গন্ধের টানে। বাড়িঘর ছেড়ে থাকেন। বায়না অনুযায়ী কাজ করেন মন দিয়ে, কথা পর্যন্ত বলেন না বাড়ির লোকজনের সঙ্গে সারাদিন। প্রতিমা মণ্ডপে গেলে অসামান্য সজ্জা আর আলোর রোশনাইয়ে চোখ ধাঁধিয়ে যায় মানুষের। সেই আলোয় আর জানা হয় না ওঁদের কথা। তাঁরা তখন নিশ্চিন্তে কুমোরটুলির পিছনের রেললাইন টপকে ঘাটে গিয়ে দাঁড়ান, কেউ কেউ পা ছড়িয়ে বসেন। কালীপুজোর পর তাঁরা ফিরে যান। কথা বলে যান, পরের বছর আবার আসার।




নানান খবর

নানান খবর

এক বাইকে চারজন! উল্টোডাঙায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, বেপরোয়া গতির বলি ২, আশঙ্কাজনক আরও ২

বেহালার আবাসনে আগুন, কালো ধোঁয়া গোটা এলাকায়

জিনগত কারণেই অ্যাজমা রোগের শিকার শিশুরা নাকি রয়েছে বড় কোন কারণ? কীভাবে নিরাময় সম্ভব, জানুন বিশেষজ্ঞদের মত

আইএসসি-তে শীর্ষ স্থান অধিকার করল কলকাতার মেয়ে সৃজনী, কিন্তু তার নেই কোনও পদবি, কেন?

নিউ টাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

শহর কলকাতায় এবার একদিনের কন্যাসন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার জঞ্জালের স্তুপ থেকে! ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য

সল্টলেকে রাসায়নিক কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা এলাকা

মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

প্রকাশিত হল মাধ্যমিকের ফল, পাশের হার ৮৬.‌৫৬ শতাংশ

সন্ধ্যা নামতেই সদয় বরুণদেব, কলকাতায় ঝেঁপে বৃষ্টি, আগামী কয়েক ঘণ্টায় বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

নিজেদের জীবন বাঁচান আগে, বড়বাজারে বাসিন্দাদের অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর

মেছুয়ায় হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হোটেল মালিক ও ম্যানেজার

শহর কলকাতায় ফের অগ্নিকাণ্ড, এবার চিনার পার্কের রেস্তরাঁয় লাগল আগুন

মেচুয়াপট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: কী জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী?

টানা ১৯ দিন এই ডিভিশনে বাতিল থাকবে একাধিক লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন, কেন?‌ 

বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারের পাশে রাজ্য, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মমতার 

মা ফ্লাইওভারে ফের দুর্ঘটনা, বেপরোয়া বাইক চালিয়ে মৃত এক

কেউ ঝাঁপ দিয়ে বাঁচতে গিয়ে, কেউ অগ্নিদগ্ধ, মেছুয়া বাজারের হোটেলে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ১৪

সোশ্যাল মিডিয়া