ভারতে মন্দিরে প্রসাদ মানেই সাধারণত সাত্ত্বিক খাবার যেমন খিচুড়ি, লাড্ডু বা ফলমূল দেওয়ার রীতি দেখা যায়। তবে দেশের নানা প্রান্তে এমন কিছু মন্দির রয়েছে যেখানে দেব-দেবীর পূজায় আমিষ খাবার প্রসাদ হিসেবে অর্পণ করা হয়। এই রীতি শুধু দেবতার প্রতি ভক্তি প্রকাশের পন্থা নয়, একইসঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্ঠানের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আসুন জেনে নেওয়া যাক ভারতের সেই ছয়টি মন্দিরের বিষয়ে-
2
7
ভিমলা মন্দির, পুরী (ওড়িশা)ঃ জগন্নাথ মন্দির চত্বরের ভেতরে অবস্থিত ভিমলা মন্দির। এখানে দেবী ভিমলাকে নিয়মিতভাবে মাছ ও পাঁঠার মাংস উৎসর্গ করা হয়। বিশেষ করে দুর্গাপূজার সময় এই রীতি ব্যাপকভাবে পালিত হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, দেবীকে অর্পণ করা এই মাংস পরে পবিত্র প্রসাদে রূপ নেয়, যা “বিমলা প্রসাদ” নামে পরিচিত।
3
7
মনিয়ান্দি স্বামী মন্দির, তামিলনাডুঃ অনন্য প্রথার জন্য খ্যাত মাদুরাইয়ের কাছের এই মন্দিরটি। প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে আয়োজিত বিশেষ উৎসবে এখানে ভক্তদের জন্য রান্না করা হয় পাঁঠা ও মুরগির মাংসের বিরিয়ানি। ভক্তরা ভোরবেলা থেকেই এই বিরিয়ানি প্রসাদ গ্রহণের জন্য লাইন দেন।
4
7
পরাসিনিকাডাভু মন্দির, কেরালাঃ কেরালার কন্নুর জেলার এই মন্দিরটি ভক্তদের কাছে মাছ ও টোডি (স্থানীয় খেজুরের মদ) উৎসর্গ করার জন্য পরিচিত। এখানে দেবতার উদ্দেশ্যে মাছ রান্না করা হয় এবং পরে প্রসাদ হিসেবে তা ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সমুদ্র উপকূলবর্তী মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে এই রীতি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে রয়েছে।
5
7
তারকুলহা দেবী মন্দির, উত্তরপ্রদেশঃ গোরখপুরের তারকুলহা দেবী মন্দিরে প্রতি বছর চৈত্র নবরাত্রির সময় বিশাল উৎসবের আয়োজন করা হয়। তখন দেবীর উদ্দেশ্যে হাজার হাজার ছাগল বলি দেওয়া হয়। এই মাংস পরে বড় বড় হাঁড়িতে রান্না করা হয় এবং ভক্তদের মাঝে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়।
6
7
তারাপীঠ মন্দির, পশ্চিমবঙ্গঃ তান্ত্রিক সাধনার অন্যতম পীঠস্থান তারাপীঠ। এই মন্দিরে বহুদিন ধরেই পশু বলি ও মাংস উৎসর্গের প্রথা চলে আসছে। বিশেষ করে ছাগলের মাংস ও বিভিন্ন মাছ যেমন শোল মাছ দেবীর উদ্দেশ্যে অর্পণ করা হয়। ভক্তদের জন্য পরে ভাত, ডাল ও সবজির সঙ্গে এই মাংস পরিবেশন করা হয়।
7
7
ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, কলকাতাঃ কলকাতার অন্যতম প্রাচীন কালীবাড়িগুলোর একটি হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। এখানে আজও পশু বলির রীতি চালু রয়েছে। বলি দেওয়া পশুর মাংস রান্না করে দেবীকে নিবেদন করা হয়। পরে তা ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়।