আজকাল ওয়েবডেস্ক: কাফা নেশনস কাপে তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ে সোমবার বিকেলে মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত ও ওমান। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ব্লু টাইগার্সরা নামবে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। দুই দলই নিজেদের গ্রুপ পর্বে রানার্স-আপ হিসেবে শেষ করেছে। ভারত গ্রুপ এ থেকে, আর ওমান গ্রুপ বি থেকে। এশিয়ান ফুটবলে ভারত ও ওমানের দ্বৈরথ নতুন কিছু নয়। এখনও পর্যন্ত মোট দশবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দেশ। এর মধ্যে ছ’বার জয় পেয়েছে পশ্চিম এশিয়ার দলটি। ভারত জিততে পেরেছে মাত্র একবার। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় পর ফের মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল।
সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০২১ সালে, যেখানে ম্যাচ শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়। তবে সেই ম্যাচটি ভারতের জন্য ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। করোনা কাল কাটিয়ে প্রায় দু’বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছিল ব্লু টাইগার্সরা। তবে দলে ছিলেন না অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী, যিনি তখনও কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠার পথে। সেই ম্যাচে প্রথমার্ধটা শুরু হয়েছিল ভারতের জন্য ভীষণ চাপের মধ্যে দিয়ে। ম্যাচের প্রথম দশ মিনিটে ওমানের ধারাবাহিক আক্রমণে বিপর্যস্ত ছিল ইগর স্টিমাচের শিষ্যরা। বল নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ছিল প্রতিপক্ষের দখলে। ৪৩তম মিনিটে ভারত আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে। গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংহের ভুলে বল গিয়ে লাগে চিংলেনসানা সিংয়ের গায়ে এবং সোজা জালে জড়িয়ে যায়।
যদিও এর আগে অমরিন্দর একটি পেনাল্টি বাঁচিয়ে দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন। এক গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। মনবীর সিংয়ের জোরালো হেড ভারতকে ম্যাচে ফেরায়। বিপিন সিংয়ের ডান দিক থেকে ভেসে আসা নিখুঁত ক্রস কাজে লাগিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন এই স্ট্রাইকার। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনও দলই গোল করতে পারেনি। ১-১ ফলাফলে শেষ হয় ম্যাচ। তবে সেই দৃঢ় প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা দেবে খালিদ জামিলের ভারতকে, যখন তারা কাফা নেশনস কাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ফের ওমানের মুখোমুখি হবে।
সোমবার ওমানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ খেলার আগে ভারতীয় শিবির যে বেশ চনমনে ও উত্তেজিত, তা তাদের ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির কথাতেই স্পষ্ট। খালিদ জামিলের দলের সেন্টার-ব্যাক আনোয়ার আলি ভারতের জার্সিতে আরেকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে বেশ খুশি। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটকে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক ম্যাচের গুরুত্বই আলাদা। তাই যখনই অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া যায়, তখনই তা আমাদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাস জোগায়। কারণ এই স্তরে খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করার গুরুত্ব একেবারেই অন্য রকমের”।
বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বে তাদের শেষ ম্যাচে আফগানদের বিরুদ্ধে ০-০ ড্রয়ের ফলে ভারতের প্লে অফে ওঠার রাস্তা আরও কঠিন হয়ে যায়। তবে ইরান ও তাজিকিস্তান ২-২ ড্র করায় ভারতের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে এবং তারা গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে তৃতীয় স্থান নির্ধারক ম্যাচে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ভারতীয় দলের নতুন হেড কোচ খালিদ জামিলের অধীনে নীল বাহিনী প্রমাণ করেছে যে রক্ষণভাগে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী। আসন্ন প্লে অফ ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারক ম্যাচে এই শক্তিই তাদের সাহায্য করতে পারে।
ফিফা ক্রমতালিকায় ১৩৩ নম্বরে থাকা ভারতের কাছে ৭৯ নম্বরে থাকা ওমানের বিরুদ্ধে এই ম্যাচ যে বেশ কঠিন হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আনোয়ারদের আসল লক্ষ্য ছিল এমনই দলের বিরুদ্ধে যথাসম্ভব বেশি মাঠে থাকা, যা এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭-এ যোগ্যতা অর্জনের প্রস্তুতিতে অনেকটা সহায়তা করবে। আগামী মাসে বাছাই পর্বে তারা সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে। এই ম্যাচ প্রসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল এফসি-রও রক্ষণের ভরসা আনোয়ার বলেন, “আমি মনে করি এটি আমাদের কাছে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রস্তুতির অন্যতম সেরা সুযোগ। আমরা সোমবার যথাসম্ভব ভাল খেলে তৃতীয় স্থান পাওয়ার চেষ্টা করব”।
