আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা মণীশের ফোন কাণ্ড বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। আচমকাই রজত পাতিদারের নম্বরের সিম তাঁর কাছে চলে আসায় রীতিমত বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন তিনি। এমনকি, তাঁর কথা হয়েছে বিরাট কোহলি, এবি ডিভিলিয়ার্সের সঙ্গেও। কিন্তু এবার সামনে এল মণীশের সঙ্গে বিরাটের সেই কথোপকথন। গারিয়াবাঁদ জেলার মাডাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মণীশের জীবনে এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। জানা গিয়েছে, দোকান থেকে সিম কিনে হোয়াটসঅ্যাপ চালু করার পরই মণীশ এবং তার বন্ধু খেমরাজ দেখতে পান প্রোফাইলের ছবিতে রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক রজত পাতিদার।
প্রথমে তারা ভেবেছিলেন, এটি হয়তো সিস্টেমের কোনও ত্রুটি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন আসতে শুরু করে ক্রিকেট কিংবদন্তি বিরাট কোহলি, এবি ডিভিলিয়ার্স যশ দয়ালের কাছ থেকে! মণীশের বন্ধু খেমরাজ হাসতে হাসতে জানিয়েছেন, ‘জীবনে ভাবিনি আমাদের গ্রাম থেকে বসে বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলব। এবি ডিভিলিয়ার্স যখন ফোন করলেন, ইংরেজিতে কথা বলছিলেন, একটা কথাও বুঝিনি, কিন্তু আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম’। শুরুতে মণীশ-খেমরাজ ভেবেছিলেন কেউ হয়তো প্র্যাঙ্ক কল করছে। কিন্তু গত ১৫ জুলাই রজত পাতিদার নিজেই ফোন করেছিলেন। তিনি অনুরোধ করেন, ‘ভাই, দয়া করে আমার সিম ফেরত দিন’। এমনকি পুলিশ পাঠানোর কথাও জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন: একের পর এক অভিযোগ, এবার দলই পেলেন না আরসিবি পেসার! কেরিয়ার শেষের পথে?
এরপরই গারিয়াবাঁদ পুলিশ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়। গারিয়াবাঁদের ডেপুটি এসপি নেহা সিং জানান, টেলিকম নীতি অনুযায়ী ৯০ দিন সিম ব্যবহার না হলে তা নিষ্ক্রিয় হয়ে নতুন গ্রাহককে বরাদ্দ করা হয়। এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। রজত পাতিদার মধ্যপ্রদেশ সাইবার সেলকে জানান, ‘তাঁর পুরনো নম্বর অন্য কেউ ব্যবহার করছে, ফলে পুলিশ মণীশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিবারের সম্মতিতে সিম ফেরত দেন পাতিদারকে’। পুলিশ জানিয়েছে, এতে কারও কোনো দোষ ছিল না, এটি শুধুই নিয়মমাফিক টেলিকম প্রক্রিয়ার ফল। গ্রামের মানুষ এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তাদেরই প্রতিবেশি এক যুবক সত্যি সত্যিই বিরাট কোহলি ও এবি ডিভিলিয়ার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন।
মণীশের ভাই দেশবন্ধু বিসি বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বেশিরভাগ মানুষই আরসিবির সমর্থক। এমন কিংবদন্তিদের সঙ্গে কথা বলা, এটা এখনও আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো’। কিন্তু বিরাট কোহলি ফোনে কী বলেছিলেন মণীশকে? যুবকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিরাট ভাই আমার পরিচয় জানতে চেয়েছিলেন এবং জিজ্ঞেস করেছিলেন আমি রজত পাতিদারের নম্বর ব্যবহার করছি কী কারণে’। আমি সত্যি সত্যিই এখনও ভাবতে পারছি না যে কোহলি, ডিভিলিয়ার্সের সঙ্গে কথা বলেছি।
বিভ্রান্তির সূত্রপাত হয় যখন পাতিদার নিজের পুরনো নম্বরে প্রবেশ করতে না পেরে মধ্যপ্রদেশ সাইবার সেলের দ্বারস্থ হন। তারা গারিয়াবাঁদ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে মণীশের গ্রামে পৌঁছে সিম উদ্ধার করে রজত পাতিদারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বিরাট কোহলির ভক্ত মণীশ বলেন, ‘ঘটনাটা ভুলতে পারব না কখনও। আশা করি একদিন পাতিদারের সঙ্গে দেখা হবে’। রজত পাতিদার এখনও এই ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু মন্তব্য করেননি। তবে মণীশের কাছে এই স্বল্পস্থায়ী পরিচয় বিভ্রাট ক্রিকেট তারকাদের সঙ্গে যোগাযোগের এক অবিস্মরণীয় সুযোগ এনে দিয়েছে।
