আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ ডিসাইডারে বাজিমাত করল ভারতীয় দল। যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার ব্রিলিয়ান্সে ম্যাচে দাঁড়াতেই পারল না প্রোটিয়ারা।

তৃতীয় একদিনের ম্যাচে একপেশে জয় ভারতের। ম্যাচের নায়ক যশস্বী জয়সওয়াল হলেও ভারতের ইনিংস জুড়ে তাঁকে আগলে রেখে খেলিয়ে গেলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি।

ম্যাচে ভারতের ইনিংস একটু খুঁটিয়ে দেখলেই সেটা বোঝা যাবে। যশস্বীর সঙ্গে ওপেনে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা। ইনিংসের শুরুতে জয়সওয়ালের ব্যাটে সেভাবে বল লাগছিল না।

আস্তে আস্তে সিঙ্গেল খেলে রান তুলছিলেন। অপরদিকে, মেরে খেলছিলেন রোহিত। একবারের জন্যও চাপ ফেলেননি যশস্বীর ওপরে। জয়সওয়াল মেরে খেলা শুরু করলেন অর্ধশতরান হওয়ার পরে।

ততক্ষণে তিনি পুরোপুরি সেট হয়ে গিয়েছেন রোহিতের ছত্রছায়ায় থেকে। তাঁর ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগের চাপ সামলে দিলেন বিরাট কোহলি। যশস্বী তখন নার্ভাস নাইন্টিজে।

কিন্তু ক্রিজে যে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম 'প্রেসার কুকার' বিরাট কোহলি। মাথা ঠাণ্ডা রেখে যশস্বী সম্পূর্ণ করলেন একদিনের ক্রিকেটে তাঁর কেরিয়ারের প্রথম শতরান। অ

পরদিকে, দুই কিংবদন্তি কোহলি এবং রোহিত শতরান না করতে পারলেও ব্যাটে বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা থাকছেন, কোথাও যাচ্ছেন না।

ধারাভাষ্যকাররা তখন বলছেন, আবার কবে খেলতে দেখা যাবে রোহিত-কোহলিকে। ইরফান পাঠান বলছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ যদি রোহিতের হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ তাহলে বিরাটের।

ঘরের মাঠে হলে কী হবে, এই প্রোটিয়া দলটাই তো টেস্টে গম্ভীরদের নাকানিচোবানি খাইয়েছে। এই দুই ভিন্টেজ ব্যাটার না হলে ফল অন্যরকম হতেই পারত কে বলতে পারে।

তবে সেসব এখন অতীত। রোহিত শর্মার ৭৫ এবং বিরাটের ৬৫ রান সিরিজ ডিসাইডারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এদিন। রোহিত যেমন শুরুর দিকে চাপ সামলালেন, কোহলি নেমে মারমুখী ভঙ্গিতে ব্যাট চালালেন।

নো লুক শটে ছক্কা, পুল, কভার ড্রাইভ সবদিকে রান করেছেন এদিন। রোহিতও সামনের পায়ে পুল মেরে ছয় হাঁকিয়েছেন এদিন। ফলে, ২৭১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুুঁতে এদিন বিশেষ বেগ পেতে হল না টিম ইন্ডিয়াকে।

টানা ২০ ম্যাচ টসে হেরে অবশেষে রাহুল এদিন টসে জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। টস জেতার পরে মজা করে লোকেশ রাহুল মুষ্টিবদ্ধ হাত ছোড়েন। লোকেশ রাহুল ডান হাতি।

কিন্তু টসের সময়ে বাঁ হাতের সাহায্য নেন ভারত অধিনায়ক। পরে ভারতের বোলিং কোচ মর্নি মর্কেলের কাছে টস জেতার কৌশল ফাঁস করেন রাহুল। টস জেতায় ভারতীয় শিবিরেও আনন্দের রেশ।

হর্ষিত রানাকে দেখা যায় তিনি আনন্দে মেতে উঠেছেন। সতীর্থদের জড়িয়ে ধরছেন আনন্দে। আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায় ঋষভ পন্থ ও অর্শদীপ সিংকেও। টানা টস হারছিল ভারত।

২১ নম্বর ম্যাচে এসে টস জিতল। ভারত শেষ টস জিতেছিল ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তারপর থেকে শুধু টস হার।

দুই বছর পর টস জিতল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে নামিয়ে শূন্য রানেই বিপজ্জনক রায়ান রিকলটনকে ফেরান অর্শদীপ।

সেখান থেকে ম্যাচের হাল ধরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং কুইন্টন ডি-কক। একসময় দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের পার্টনারশিপ বিপজ্জনক দেখতে লাগলেও বাভুমাকে আউট করে পার্টনারশিপ ভাঙেন জাদেজা। মিডল অর্ডারে ব্রিটজকে এবং ব্রেভিস ভাল শুরু করেন।

কিন্তু তাঁরা কেউই বড় রানে পরিণত করতে পারেননি। ব্রিটজকেকে(২৪) ফেরান প্রসিদ্ধ এবং ব্রেভিসকে(২৯) ফেরান কুলদীপ যাদব। এডেন মার্করামও ফেরেন ১ রানে।

রান করতে পারেননি কভিন বসচ এবং মার্কো জানসেনও। শতরান করা ডি-কককে বোল্ড করেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। শেষের দিকে কেশব মহারাজের অপরাজিত ২০ রানের দৌলতে ২৭০ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।কুলদীপ এবং প্রসিদ্ধ চারটি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন অর্শদীপ এবং জাদেজা।