আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বরেকর্ড ধরার বাজি ধরেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই বাজি ধরে ২৬৪ ঘণ্টা অর্থাৎ ১১ দিন জেগে রয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে র়্যান্ডি গার্ডনার মাত্র ১৭ বছর বয়সে এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। এর আগে ২৬০ ঘণ্টা একটানা জেগে থেকে রেকর্ড করেছিলেন হনলুলু-র ডিজে টম রাউন্ডস। 

ব়্যান্ডির সঙ্গে তাঁর বন্ধু ব্রুস ম্যাকঅ্যালিস্টার এবং জো মার্সিয়ানো জুনিয়র যোগ দিয়েছিলেন। যাঁদের কাজ ছিল বন্ধুকে জাগিয়ে রাখা। তাঁরা ব়্যান্ডির মানসিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য প্রতি ছয় ঘণ্টা অন্তর ২০টি পরীক্ষার একটি সেটও পরিচালনা করেছিলেন।

তিন দিন না ঘুমানোর পর ব়্যান্ডির মনোযোগের সমস্যা এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে শুরু করে। তিনি বলেন, “চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিন থেকে মনে হতে থাকে চ্যালেঞ্জটি বেশ কঠিন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। নানা সংবাদমাধ্যম খবর করতে শুরু করে দিয়েছিল।“

এই পরীক্ষার জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম গবেষক উইলিয়াম ডিমেন্ট শেষ তিন দিন ব়্যান্ডিদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার নিবিড় রেকর্ড রেখে, মি. ডিমেন্ট (যাকে পরবর্তীতে ঘুম বিজ্ঞানের জনক বলা হবে) ব়্যান্ডিকে বিপদের মুখে ঠেলে দেন। তাঁকে নিয়ে গাড়িতে ঘোরেন, জোরে রেডিওতে গান শোনান। এমনকি নানা রকমের খেলা খেলতেও জোর করেন। আশ্চর্যজনক ভাবে টানা ১০ দিন না ঘুমিয়েও ব়্যান্ডে সেই খেলায় জিতে যান।

পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, ঘুমের অভাব ব়্যান্ডির মস্তিষ্কের ক্ষমতার উপর বিরাট প্রভাব ফেলেছিল। জানা গিছে, তাঁর মেজাজ খিটখিটে, মনোযোগের সমস্যা এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তি হ্রাস, প্যারানয়া এবং এমনকি হ্যালুসিনেশনের অভিজ্ঞতাও হয়েছিল।

রেকর্ড ভাঙার পর ব়্যান্ডি ১৪ ঘন্টা ৪৫ মিনিট ঘুমিয়েছিলেন। ডাঃ ডিমেন্ট এবং তাঁর দল তাঁর মস্তিষ্কের তরঙ্গ, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ এবং অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় লক্ষণ বিশ্লেষণ করেছিলেন। কিশোরটি প্রথমে স্বাভাবিক ঘুমের সময়সূচীতে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও, ব়্যান্ডির পরে জানিয়েছিলেন যে তিনি কয়েক দশক ধরে অসহনীয় অনিদ্রায় ভুগছিলেন। ব়্যান্ডিক রেকর্ড এরপর বেশ কয়েকবার ভাঙা হয়েছে। তবে, ১৯৯৭ সালে নিরাপত্তার কারণে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নতুন প্রচেষ্টা গ্রহণ বন্ধ করে দেয়।