আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মীদের সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়ে কটাক্ষের মুখে পড়েছেন বহুজাতিক সংস্থা লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি)-র চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যন। কর্মীদের রবিবারেও কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৫১ কোটি টাকা বেতন পেয়েছেন। যা এলঅ্যান্ডটি-র একজন মধ্যবেতনের কর্মীর ৫৩৪ গুণ। 

ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত অর্থবর্ষে  সুব্রহ্মণ্যনের বেতন ছিল ৩.৬ কোটি টাকা। অন্যান্য বরাদ্দ বাবদ আরও ১.৬৭ কোটি টাকা। কমিশন বাবদ পেয়েছেন ৩৫.২৮ কোটি টাকা। অবসরকালীন বরাদ্দ বাবদ সাড়ে ১০ কোটি টাকা। মোট ৫১ কোটি টাকা। অপর দিকে, গত অর্থবর্ষে একজন এলঅ্যান্ডটি কর্মীর গড় বেতন ছিল ৯.৫৫ লক্ষ টাকা। 

কয়েকদিন আগে একটি ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ''আমার আফশোস, আমি কর্মীদের দিয়ে রবিবার কাজ করাতে পারি না। যদিও তা করাতে পারি আমার চেয়ে খুশি কেউ হবে না। কারণ আমি নিজেও রবিবার কাজ করি।'' তিনি আরও বলেন, ''বাড়িতে বসে থেকে কী করবেন? কতক্ষণ স্ত্রীয়ের মুখের দিকে চেয়ে বসে থাকবেন? অফিসে আসুন কাজ শুরু করে দিন।'' এমনকি তিনি পরামর্শ দেন সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার জন্য। এই মন্তব্যের পরেই তাঁকে নফোসিস কর্তা এন আর নারায়ণমূর্তির সঙ্গে তুলনা করা শুরু হয়। নারায়ণমূর্তিও কর্মীদের ৭০ ঘণ্টা কাজের কথা বলে কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন। 

সুব্রহ্মণ্যনের ভিডিওতে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কেন স্বল্প বেতনের কর্মীরা সিইও-দের মতো বেশি সময়ে কাজ করবেন। একজন লিখেছেন, চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার কোনও ইচ্ছে নেই। তাদের সেরা হতে দিন। এমন কিছু পার্থক্য তৈরি হবে না। আমি আমার সীমিত সময়টুকু পরিবারে সঙ্গে, আমার প্রিয়জনের সঙ্গে কাটাতে চাই।'' অন্য একজন লিখেছেন, ''এই জন্যই ভারতে সরকারি চাকরির এত চাহিদা। বেসরকারি সংস্থাগুলি কর্মীদের শুধু শোষণ করতে পারে।'' কর্মীদের পাশে দাঁড়িয় সুব্রহ্মণ্যনের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন শিল্পপতি হর্ষ গোয়েঙ্কা এবং অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। 

সুব্রহ্মণ্যনের ৯০ ঘণ্টা কাজের নিদান দেওয়ার মন্তব্যকে ঘিরে হওয়া সমালোচনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলঅ্যান্ডটি। চেয়ারম্যানের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশের বিকাশের জন্য অসাধারণ প্রচেষ্টার প্রয়োজন এবং বিশেষ করে একটি জাতির উন্নয়নের জন্য বর্তমান সময়ে কর্মীদের আরও বেশি শ্রম দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।