আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইন্টারনেটের দৌলতে এখন অনলাইনে জিনিস কেনা বাম হাতের খেল। আঙুলের এক ছোঁয়াতেই হাজারো রকমের বিচিত্র জিনিস চলে আসে বাড়িতে। মাঝে মাঝে সেইসব জিনিসই থাকে অবিশ্বাস্য ছাড়। কিন্তু ঠিকমতো যাচাই না করে কিনলে অল্প দামে কেনা জিনিস বিপদ দেখে আনতে পারে। এমনই ঘটনা ঘটল এক তরুণীর সঙ্গে। ব্রিটেনের বাসিন্দা মলি ওয়াটসন অল্প দামে অনলাইন থেকে কিনেছিলেন এক বাহারি অন্তর্বাস। সেই অন্তর্বাস পরতেই তরুণীর এমন অবস্থা হল যা জানলে কেঁপে উঠবে বুক।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?

২৭ বছর বয়সি মলি মে মাসে অনলাইনে এক বিশেষ ধরনের অন্তর্বাস কেনেন। মে মাসে কেনা ওই বিশেষ ধরনের অন্তর্ভুষ্টির দাম পড়েছিল হাজার টাকা। সমাজমাধ্যমের এক বিজ্ঞাপন থেকে সেই অন্তর্বাসের খোঁজ পেয়েছিলেন তিনি। জুলাই মাসে তাঁর বোনের সাধ ছিল। নতুন অন্তর্বাস পরে সেই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন মলি। কিন্তু অন্তর্বাস পরিধানের কিছুক্ষণ পরই কোমর, উরু এবং গোপনাঙ্গে তীব্র জ্বালা অনুভব করতে শুরু করেন তিনি। যেন অসংখ্য মৌমাছি হুল ফোটাচ্ছে তার নিম্নাঙ্গে। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে কোন ভাবে শৌচাগারে যান তরুণী। সেখানে নিজের পোশাক পরীক্ষা করতেই চক্ষু চড়কগাছ তাঁর।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?

দেখেন স্বল্পদামে কেনা সেই সাধের অন্ত্রবাসে যে ইলাস্টিক ছিল সেই ব্যান্ডগুলি রীতিমত গলে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিগলিত রাবারের মতো আটকে গিয়েছে ত্বকে। তখন জ্বালায় হাত দিয়েই সেই রাবার তুলে ফেলার চেষ্টা করেন মলি। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। যন্ত্রণা এতই বেড়ে যায় যে কোনও রকমে শৌচাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।

পরিজনদের সহায়তায় মলিকে ভর্তি করা হয় লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে। অন্তর্বাস থেকে এমন ক্ষত তৈরি হওয়া সম্ভব? মলিকে দেখিয়ে রীতিমত চমকে যান চিকিৎসকেরা। পরীক্ষা করে দেখা যায় মলির নিম্নাঙ্গে ফার্স্ট ডিগ্রি এবং সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন হয়েছে। অর্থাৎ খারাপ ভাবে পড়ে গিয়েছে তরুণীর দেহের একটি বড় অংশ।

হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যান্ডেজ করে রাখতে হয় পুড়ে যাওয়া অংশগুলি। দীর্ঘদিন অফিসে যেতে পারেননি তিনি। বাড়িতে থেকেই কাজ করতে বাধ্য হন মলি। অন্তুর্বাস প্রস্তুতকারী সংস্থার উপর রীতিমতো বিরক্ত হয়ে তাদের হেল্প লাইন নাম্বারে অভিযোগ জানান তরুণী। যাবতীয় চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য জানান তাদের। কিন্তু কোন রকম ক্ষমা চাওয়া তো দূর, মলিকে কেবলমাত্র হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয় সংস্থাটি। অন্তর্বাহ সংস্থার এহেনও দায়িত্ব জ্ঞান হীনতায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মলি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আমি চাইনা আপনাদের টাকা তবে এটুকু বলতে পারি জীবনে আর কোনদিন আপনাদের সংস্থার পোশাক কিনব না।”

ক্ষুব্ধ মলি এরপর নিজেই তদন্ত করে বার করেন আর কারা সেই সংস্থার অন্তর্বাস কিনেছেন। যোগাযোগ করেন তাঁদের সঙ্গে। দেখা যায় মলির মতো এমন মারাত্মক সমস্যা না হলেও প্রায় সকলেই চুলকানি এবং জ্বালা অনুভব করেছেন ওই অন্তর্বাস পরার পর। এরপর আক্রান্ত সকলকে নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন মলি। সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে অন্তর্বাস প্রস্তুতকারী সংস্থা। ১৮০ ডিগ্রি ডিগবাজি খেয়ে তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে জানানো হয়, ওই অন্তর্বাস আর বিক্রি করা হবে না।