আজকাল ওয়েব ডেস্ক: ঘরে ঘরে কোলেস্টেরলের আক্রমণ, চিকিৎসা পরিভাষায় যা ডিসলিপিডিমিয়া নামে পরিচিত।রোজকার ব্যস্ততায় অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসে অনিয়মেই মানুষ এখন বেশি অভ্যস্ত।সুতরাং সারা পৃথিবীতে প্রতি তিনজনে একজন কোলেস্টেরলের শিকার। বাঙালীদের মধ্যে ৫০% বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত। 

লক্ষণ হিসেবে চোখের নিচে হলদেটে ভাব বা ছোট ছোট থলির মতো ফুলে যায় চোখের আশপাশ।

মূলত জীবনধারা ও খাদ্যাভাসে অনিয়ম থেকে এই রোগ আক্রমণ করে। তাছাড়া মিষ্টি,ময়দা, ভাজাভুজি বা পারিবারিক ইতিহাসে কোলেস্টেরল থাকলে, সেই পরিবারের কেউ যদি ধূমপানে অভ্যস্ত থাকে, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে, ফ্যাটি লিভার এবং ওবিসিটি থাকলে তারাও কোলেস্টেরলের শিকার হয়।

কোলেস্টেরলকে আদতে লিপিড প্রোফাইল বলে।এর অনেকগুলো উপাদান রয়েছে। যেমন হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন, লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন, টোটাল কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড।উপরের উপাদানগুলো কোন একটি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম বেশি হলেই ডিসলিপিডিমিয়ার সৃষ্টি হয়।

এইচ ডি এল পুরুষের ৬০ ও মহিলাদের ৫০ মিগ্রা মাত্রার চেয়ে বেশি থাকা ভালো। ৪০ এর কম হলে খারাপ।এলডিএল ৭০ মিগ্রার চেয়ে কম থাকলে ভালো বিষয়,এটি একশোর বেশি থাকলে খারাপ।ট্রাইগ্লিসারাইড ১৫০ মিগ্ৰা কম থাকা প্রয়োজন। ধূসর বেশি থাকলে বেশ খারাপ। 

টোটাল কোলেস্ট্রেরল ১২৫ থেকে ২০০ মিগ্ৰার মধ্যে থাকা ভীষণ জরুরি।

কোলেস্টেরল রক্তনালীর ভিতর জমে গিয়ে ক্লট সৃষ্টি করে ও নালিগুলো সরু হয়ে যায়।সেই থেকেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। তাই ডিসলিপিডেমিয়াকে 'সাইলেন্ট কিলার' বলা হয়।

প্রচুর টাটকা শাকসবজি, ফল,ছোট মাছ এবং ওটস প্রভৃতি হোলগ্রেন খাবার খেলে উপকার মিলবে। তাছাড়া কাঁচা রসুন,কাঠবাদাম,ছানা, দইও উপকারী।সবথেকে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনা ভীষন জরুরী।প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হবে , কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করা দরকার। সঙ্গে অন্য রোগ বা ওষুধের কারণে সমস্যা হলে মূল অসুখের চিকিৎসা আগে জরুরী।

৪৫ বছর বয়সের পর লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করতে হবে ছয় মাস অন্তর।কারণ এই রোগের লক্ষণ ধরা পড়ে না। ধূমপানের অভ্যাস, ওবেসিটি, হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে সাবধান হন।

ভাজাভুজি, ফাস্টফুড, কেক, পিৎজার মত খাবার এড়িয়ে চলুন।রেডমিট ও চিংড়ির মাথা চলবে না।