আজকাল ওয়েবডেস্কঃ স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ‘গাট হেলথ’-এ নজর দিতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। আর এই 'গাট হেলথ' হল, গ্যাস্ট্রো এনটেস্টাইনাল হেলথ। সহজ ভাষায় বললে পেটের স্বাস্থ্য। যার মধ্যে পড়ে পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র এবং কোলন। অন্ত্রের স্বাস্থ্য হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এমনকী মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা হলে শরীর বিভিন্ন লক্ষণের মাধ্যমে তা জানান দেয়। যা ঠিক সময়ে চিহ্নিত করতে পারলেই বিপদ এড়াতে পারবেন। 

* পেট ফাঁপাঃ ক্ষুদ্রান্ত্রের ব্যাকটেরিয়া অতিরিক্ত বেড়ে গেলে অন্ত্রে ভাল ও খারাপ ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার হজম না হলে সেগুলি ব্যাকটেরিয়াল ফার্মেন্টেশনের কারণে গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে পেট ফাঁপার সমস্যা হয়। এই সমস্যা প্রতিরোধে পেঁয়াজ, রসুন এবং ডালের মতো কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দিন। ধীরে ধীরে এবং ভালভাবে চিবিয়ে খান। খাদ্যতালিকায় প্রোবায়োটিক রাখুন। কার্বনেটেড পানীয় এবং অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

* কোষ্ঠকাঠিন্যঃ কম ফাইবারযুক্ত খাবার, শরীরে জলশূন্যতা, অথবা অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যহীনতা হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। ফলে মলত্যাগের অভ্যাসেও সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে গোটা শস্যদানা, ফল এবং শাকসবজি থেকে ফাইবার বেশি খান। মল নরম এবং ঠিক রাখতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। সারাদিন শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন। খাদ্যতালিকায় বাদাম, বীজ এবং শাকের মতো ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখুন।

* অ্যাসিডিটিঃ  পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে গেলে এই সমস্যা হতে পারে। যার ফলে বুক জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি এবং বদহজম অনুভূত হয়। অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন এড়াতে ঘন ঘন অল্প পরিমানে খাবার খান। রিফ্লাক্স করতে পারে এমন মশলাদার, অ্যাসিডিক এবং চর্বিযুক্ত খাবার সীমিত রাখুন। অ্যাসিডের বিপরীত প্রবাহ রোধ করতে খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়া এড়িয়ে চলুন। হজমে সহায়তার জন্য আদা বা মৌরি চায়ের টোটকা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

* ক্লান্তিঃ অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হলে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শোষণ করতে পারে না। ফলে শক্তির মাত্রা কমে যায়। উপরন্তু, অন্ত্রের ভারসাম্যহীনতা সেরোটোনিন উৎপাদন ব্যাহত করতে পারে। যা মেজাজ এবং শারীরিক শক্তির উপর প্রভাব ফেলে। এই সমস্যা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার খান। ডায়েটে দই, কিমচির মতো ফার্মেন্টেড খাবার রাখুন। পর্যাপ্ত ঘুমান এবং দুশ্চিন্তা বন্ধ করুন। অবসাদের কারণ হতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন।

যদি এই ধরনের লক্ষণ কয়েক সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।