কথায় বলে, পেট ভাল থাকলে সব ভাল থাকে। পেটের সমস্যায় ভুগলে আরও অনেক শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তালিকায় রয়েছে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, অরুচি, ডায়ারিয়া। তবে এই সবের মধ্যে সারা বছরই অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। ইদানীং অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রতি ঝোঁক, শরীরচর্চার অভাব সহ আরও অনেক কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। পাকস্থলী, অন্ত্রে খাবার শোষিত হয়ে তা মলদ্বারের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে না হলেই কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত কয়েকটি বীজ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধান মিলতে পারে।
চিয়া বীজঃ স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন, অথচ চিয়া বীজের নাম শোনেননি, এমন মানুষ প্রায় নেই। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, আকারে ছোট হতে পারে কিন্তু এই বীজের গুণ অনেক।ওজন কমানো থেকে পেট ভাল রাখা, চিয়া সিডের জুড়ি মেলা ভার। চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে রাখলে জেলে পরিণত হয়। এই বীজে উপস্থিত দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রে উপস্থিত ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এবং মলত্যাগ সহজ করে। এই স্বাস্থ্যকর বীজে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাল সমন্বয় রয়েছে। ফলে এতে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মেলে। চিয়া বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে বাদাম দুধ বা দইয়ের সঙ্গে খান। চাইলে এতে বেরি যোগ করতে পারেন। এতে স্বাদ এবং উপকারিতা দুই বাড়াতে পারেন।
ফ্ল্যাক্স সিডঃ অন্ত্র ভাল রাখতে ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি বীজ একাই একশো। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এই তিসি হরমোনের হেরফের সামাল দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য হোক বা কোলেস্টেরলের সমস্যা—ফ্ল্যাক্স সিড সব শারীরিক সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর হয় এই বীজ। তাই তো ফ্ল্যাক্স সিডকে বলে 'সুপারফুড'। এই বীজের পুষ্টিগুণের কোনও তুলনা হয় না। ফাইবারে উৎকৃষ্ট এই বীজে রয়েছে লিগন্যান, ভাল মানের ফ্যাট, অ্যান্টঅক্সিড্যান্ট, প্রোটিন। এই সিড প্রতিদিন পরিমাণ মতো খেতে পারলে দারুণ লাভ। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের গুরুত্বপূর্ণ উৎস এই বীজ। এতে রয়েছে আয়রনও। প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।

সবজা বীজঃ দেখতে অনেক চিয়া সিডের মতো হলেও এটি কিন্তু আলাদা। তবে চিয়া সিডের মতই খুবই উপকারী হল সবজা সিড। এই বীজের মধ্যে একাধিক গুণ রয়েছে। রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি, খনিজ। যে কারণে এটি শরীর ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সবজার বীজ বা তুলসীর বীজ কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুবই কার্যকর। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং জলে ভিজিয়ে রাখলে জেলের মতো আকার ধারণ করে, যা পেট পরিষ্কার করে। এই বীজগুলি কেবল মল নরম করে না বরং অন্ত্র পরিষ্কার করতে এবং বিষমুক্ত করতেও সাহায্য করে। আধ চা চামচ সব্জার বীজ ১০-১৫ মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খালি পেটে পান করুন। কয়েকদিন খেলেই উপকার পাবেন।
