শরীরের অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান প্রোটিন। পেশি শক্তিশালী করা থেকে ওজন নিয়ন্ত্রণ, সার্বিক সুস্থতার জন্য প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি থাকে, বারে বারে খাওয়ার প্রবণতাও কমে যায়। তাই রোজের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা প্রয়োজন। 

হিসেব অনুযায়ী, একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের রোজ ৫০-৬০ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত। অন্যদিকে, মহিলাদের প্রোটিন খেতে হবে ৭০-৮০ গ্রাম। যদিও দৈনিক কতটা প্রোটিন খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে কোনও ব্যক্তির ওজন, উচ্চতা, শারীরিক পরিস্থিতি, বয়সের উপর। খাদ্যাভ্যাসের গোলমালের কারণে অনেক সময়েই শরীরে প্রোটিনের অভাব দেখা যায়। আর শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকলেই হানা দিতে পারে জটিল রোগ। তাই আগেভাগেই প্রোটিনের ঘাটতি বোঝা জরুরি। সেক্ষেত্রে কয়েকটি লক্ষণ খেয়াল করলেই সতর্ক হন।  

১. ফোলাভাবঃ প্রোটিনের ঘাটতির প্রথম লক্ষণ হল ফোলাভাব। হাত, পা বা পেটে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। প্রোটিন রক্তে তরল পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে। এর ঘাটতি হলে টিস্যুতে জল জমা হতে শুরু করে এবং শরীর ফুলে যায়।

আরও পড়ুনঃ কনট্যাক্ট লেন্স নিয়ে এই সব ভুল ধারণা থাকলেই সর্বনাশ! চোখ ভাল রাখতে জানুন ডাঃ অনন্যা গঙ্গোপাধ্যায়ের জরুরি পরামর্শ

২. মেজাজ পরিবর্তনঃ প্রোটিন কেবল পেশি তৈরি করে না, মস্তিষ্ককেও সুস্থ রাখে। এতে উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কের রাসায়নিক যেমন ডোপামিন, সেরোটোনিন) তৈরিতে সাহায্য করে। যদি এগুলির ঘাটতি থাকে, তাহলে মেজাজ পরিবর্তন, উদ্বেগ বা মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে ।

৩. ক্লান্তিঃ পর্যাপ্ত ঘুমের পরেও যদি আপনি ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে এর কারণ হতে পারে প্রোটিনের অভাব। শরীরে শক্তি সরবরাহকারী হরমোন এবং এনজাইম তৈরির জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। এর অভাবে দুর্বলতা, অলসতা এবং মানসিক ক্লান্তি বাড়ে।

৪. চুল, নখ ও ত্বকের সমস্যাঃ প্রোটিনে উপস্থিত কেরাটিন এবং কোলাজেন চুল, ত্বক এবং নখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন শরীর পর্যাপ্ত প্রোটিন পায় না, তখন চুল পড়তে শুরু করে, নখ ভেঙে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

৫. অতিরিক্ত খিদেঃ প্রোটিন আমাদের দীর্ঘ সময় তৃষ্ণা ও খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তা না পেলে বার বার খিদের অনুভূতি, মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা এবং এনার্জি কমে যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ বাড়িতেই লুকিয়ে ক্যানসারের 'বিষ'! আজই দূর করুন এই ৬ জিনিস, নাহলে অকালে মারণ রোগে হারাবেন প্রাণ

বেশিরভাগ সময়ে অনেকেই এই সব প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করে যান। যা সময়মতো না বোঝার ফলে গুরুতর রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই খাদ্যতালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে ভুলবেন না। দুধ, ডাল, ডিম, মাছ, সয়াবিন, পনির এবং শুকনো ফল প্রোটিনের ভাল উৎস। যদি পর্যাপ্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরও এই সব উপসর্গ দেখতে পান তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।