আজকাল ওয়েবডেস্কঃ আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হল কিডনি। মূত্র থেকে শুরু করে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায় এই অঙ্গ। তাই সুস্থ থাকতে বৃক্কের হাল ঠিক রাখা জরুরি। মানুষের শরীরে কিডনির সংখ্যা দু’টি, তাই একটি বিকল হলেও কাজ চলতে পারে অন্যটি দিয়ে। ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো প্রথমেই কিডনির ক্ষতির আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিডনির সমস্যায় চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। এদিকে সময় থাকতে কিডনির সমস্যা ধরা না পড়লে সেরে ওঠার সম্ভাবনাও কমতে থাকে। তবে শরীরের কিছু লক্ষণ রয়েছে যা কিডনির স্বাস্থ্য কেমন রয়েছে, সে সম্পর্কে আগে থেকে ইঙ্গিত দিতে পারে। যা বুঝে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।

* প্রস্রাবের রং-ধরন বদলঃ যদি আচমকা প্রস্রাবের রং বাদামী হয়ে যায় তাহলে তা কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। প্রস্রাব ঠিক মতো না হলে কিংবা একবারে প্রস্রাব করতে না পারলেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও প্রস্রাব দিয়ে রক্ত বেরলে কিংবা প্রস্রাবে ফেনা হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

আরও পড়ুনঃ যখন-তখন মুঠো মুঠো ড্রাই ফ্রুটস খেলেই হল না! জানেন কোন সময়ে কতটা শুকনো ফল খাওয়া উচিত?

 

* রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব- ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ শুধু ডায়াবেটিসের নয়, কিডনির অসুখের কারণেও হতে পারে। যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় নকচুরিয়া। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মূত্রত্যাগ করতে হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

* বমি বমি ভাবঃ কিডনি বিকল হয়ে গেলে শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন বা ক্ষতিকর পদার্থ মূত্রের সঙ্গে বেরোয় না। কিডনির সমস্যার ফলে শরীরেই সেই ক্ষতিকর পদার্থগুলি জমতে থাকে। তা থেকে বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।

* শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়াঃ পায়ের পাতা, আঙুল, মুখ ফুলতে শুরু করলেও তা কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। যদিও শুধু কিডনি বিকল হলেই যে পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে, তা নয়। হার্টের সমস্যা থেকেও পা ফুলতে পারে।

* ত্বকে প্রভাবঃ কিডনি সুস্থ না থাকলে তার প্রভাব ফুটে ওঠে ত্বকে। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করার পাশাপাশি রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে লোহিত কণিকা উৎপাদন করা, বিভিন্ন খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখা, হাড়ের স্বাস্থ্য— সবই নির্ভর করে কিডনির উপর। রক্তে বিভিন্ন উপাদান সঠিক মাত্রায় না থাকলে, ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে।

* অনিদ্রা- কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে মূত্রের মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থ দেহের বাইরে বেরতে পারে না। যার ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। দেখা গিয়েছে, যাদের কিডনির অসুখ রয়েছে, তাঁদের সুস্থ মানুষের তুলনায় ঘুমের সমস্যা বেশি হয়। তাই হঠাৎ অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

* ক্লান্তিভাব- সারাদিনের কাজের শেষে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ক্লান্ত লাগলে সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক না থাকলে শরীরে কম লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন হয়। যার ফলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সঙ্গে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব হয়। 

* খিদে না পাওয়াঃ কিডনি ঠিক ভাবে কাজ না করলে খাওয়ার ইচ্ছে চলে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আচমকা ওজনও কমে যেতে পারে।