ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত ব্যায়াম, জিম বা ডায়েট চার্ট মেনে চলা অনেকের মহিলার পক্ষেই সম্ভব হয় না। বিশেষ করে মা হওয়ার পর যেন সময় আরও কমে যায়। তবে কি ফিট থাকা অসম্ভব? একেবারেই নয়! দুই সন্তানের এক তরুণী মা তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। কীভাবে জিমে না গিয়েও বা ক্যালরি না গুনেও ফিটনেস বজায় রাখা যায়, তা জানিয়েছেন জ্যোতি কৌর। তাঁর মতে, “ফিটনেস মানে কঠোর ডায়েট নয়, বরং নিজের শরীর ও সময়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা।" তাঁর দাবি, তিনি কখনও কঠোর ডায়েট মেনে চলেন না, বরং সহজ কিছু নিয়ম মানেন, যা তাঁকে ফিট থাকতে সাহায্য করে। যা হল-
১. সন্ধ্যার পর আর খাবার নয়: জ্যোতি জানিয়েছেন, সন্ধে ৬টার পরে আর কিছু খাওয়া খান না। ঘুম থেকে উঠার পর ৩–৪ ঘণ্টা খালি পেটে থাকেন। এতে শরীরের হজম প্রক্রিয়া সময় পায়, এনার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং খিদের অনুভূতিও কমে যায়।” ব্রেকফাস্টে তিনি পছন্দ করেন ডিম, অ্যাভোকাডো ও টোস্ট। এই পুষ্টিকর ও হালকা খাবার সারাদিন তাঁর এনার্জি ধরে রাখে।
২. হাঁটাই সবচেয়ে কার্যকর ব্যায়াম: “জিমে সময় না থাকলে হাঁটাই সেরা ব্যায়াম,” বলেন জ্যোতি। সন্তানদের দায়িত্ব পালনের মাঝে হাঁটা তাঁর কাছে ‘কার্ডিও’ ও ‘রেসিস্ট্যান্স ট্রেনিং’। হাঁটলে শরীরের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে না, আবার মাংসপেশিও সক্রিয় থাকে।
৩. পর্যাপ্ত জল ও তরল খাবার: জ্যোতি বেশি করে জল ও প্রাকৃতিক পানীয় পান করেন। যেমন ডাবের জল, লেবুর জল, বা বেলের শরবত। এতে শুধু হাইড্রেশনই ঠিক থাকে না, একইসঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় খিদে কমে যায়।
৪. ভারসাম্যপূর্ণ ঘরোয়া খাবার: জ্যোতির কথায়, “আমি কোনও কঠোর ডায়েট মানি না। ঘরে তৈরি খাবারই যথেষ্ট। সপ্তাহে একদিন বাইরে খাই। ছোট ছোট পরিবর্তন যেমন চিনি বাদ দিয়ে মধু খাওয়ার মতো অভ্যাস রক্তে শর্করা ও মেজাজ দুটোই নিয়ন্ত্রণে রাখে।”
৫. মানসিক প্রশান্তি ও বিশ্রাম: এই দুই সন্তানের মায়ের মতে, ফিটনেস মানে শুধু শরীর নয়, মনেরও যত্ন। “স্ট্রেস কমলে শরীরও দ্রুত মেরামত হয়ে যায়।আমি একা সময় কাটাই, আঁকি, লিখি বা বই পড়ি-এটাই আমার ‘রিচার্জ টাইম’। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে শরীর কোনওভাবেই সুস্থ থাকে না।”
৬. প্রয়োজনীয় সাপ্লিমেন্ট: তিনি নিয়মিত ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ডি, ওমেগা-৩ এবং কালোজিরার তেল গ্রহণ করেন। এগুলো হরমোনের ভারসাম্য, মেটাবলিজম ও এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন,“এই সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।”
৭. বাস্তব মানসিকতা রাখুন: জ্যোতি বলেন, “সব বিষয়ে নিখুঁত হওয়ক সম্ভব নয়। প্রতিদিনের ছন্দে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। মা হওয়ার পর শরীরের পরিবর্তন স্বাভাবিক, তাই নিজেকে দোষ দেবেন না।”
৮. জেনেটিকস ও হরমোনের প্রভাব: তিনি মনে করিয়ে দেন, “সব শরীর এক নয়। জেনেটিক গঠন, হরমোন, এমনকী স্তনদুগ্ধ পান করনো-সবই শরীরের গতি নির্ধারণ করে। আপনি সঠিকভাবে সব কিছু করেও ফল না পেলে, থাইরয়েড বা ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স পরীক্ষা করিয়ে নিন।”
