ক্যালশিয়াম আমাদের শরীরের জন্য এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ। এটি শুধু হাড় ও দাঁতের মজবুত ভিত্তি তৈরি করে না, একইসঙ্গে মাংসপেশির স্বাভাবিক কাজ, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা,  হৃদস্পন্দন এবং হরমোনের নিঃসরণেও বড় ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসকরা বলছেন, মহিলাদের জীবনে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যালশিয়ামের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। মেনোপজের পর হাড় দুর্বল হওয়া, অস্টিওপরোসিস বা হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পিএমএস অর্থাৎ ঋতুস্রাবের আগে শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি, গর্ভাবস্থায় সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি এবং হৃদরোগের ঝুঁকির ওপরও প্রভাব ফেলে। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলে বেশ কয়েকটি লক্ষণ দেখা দেয়। জেনে নেওয়া যাক সেই বিষয়ে- 

১. মাংসপেশির টান বা খিঁচুনিঃ হঠাৎ করেই পায়ের পেশিতে টান ধরা বা হাত-পায়ে খিঁচুনি হওয়া অনেক সময় ক্যালশিয়ামের ঘাটতির ফল। নিয়মিত এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি।

২. অনিয়মিত হৃদস্পন্দনঃ হৃদপিণ্ডের সঠিক ছন্দ বজায় রাখতে ক্যালশিয়াম অপরিহার্য। এর অভাব হলে হৃদয়ের স্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে, যা মারাত্মক ঝুঁকি ডেকে আনে।

আরও পড়ুনঃ আপনি কতটা মানসিক চাপে রয়েছেন গোপনে জানান দিতে পারে সকালের প্রস্রাব! অবাক করা তথ্য উঠে এল গবেষণায়

৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও অলসতাঃ ক্যালশিয়ামের ঘাটতিতে দিনভর কোনও কাজ না করলেও অবসাদ, ক্লান্তি বা অলসতা হতে পারে। যার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে ভেবে অনেকেই উপেক্ষা করে যান। 

৪. নখ দুর্বল হয়ে যাওয়াঃ নখ বারবার ভেঙে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়ামের ঘাটতির সংকেত। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি খুব সাধারণ লক্ষণ।

৫. দাঁতের সমস্যাঃ দাঁত মূলত হাড়জাতীয় টিস্যু দিয়ে তৈরি। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলে দাঁতের ক্ষয়, ব্যথা বা নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বাড়তে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে এর প্রভাব ধীরে ধীরে হাড়ে জমা হয় এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম নিশ্চিত করা খুব জরুরি। দুধ, দই, পনির, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, ডালশস্য এবং ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস এই ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্টও খাওয়া উচিত।