আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এখন অত্যন্ত ট্রেন্ডিং একটি বিষয়। আর যখনই এই প্রসঙ্গ ওঠে তখন অনেকেই মনে করেন শরীরের চুল পরিষ্কার করে ফেলাই বিধেয়। বিশেষত বগলের নিচের অর্থাৎ বাহুমূলের চুল। বিজ্ঞাপনের দৌলতে বহু দিন ধরেই আমাদের মাথায় ঢুকে গিয়েছে, বাহুমূলের চুল মানেই দুর্গন্ধ, অস্বাস্থ্যকর বা ‘আনহাইজেনিক’। অথচ, চিকিৎসা-বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণা কিন্তু উল্টো কথা বলছে। বগলের চুল না কাটার কিছু উপকারী দিক রয়েছে, যা এত দিন আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম।
১. ত্বকে ঘর্ষণজনিত জ্বালা কমায়
বগলের ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সেখানে প্রতিনিয়ত হাতের নড়াচড়ায় চামড়ার সঙ্গে চামড়ার ঘর্ষণ হয়। এই চুলগুলি এক প্রাকৃতিক ‘বাফার’ বা নরম স্তর হিসেবে কাজ করে, ফলে ঘর্ষণ কম হয় এবং ত্বক জ্বালা, লালচে দাগ বা খসখসে হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায় বাহুমূল।
২. ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে থাকে প্রাকৃতিক কিছু ব্যাকটেরিয়া, এদের মধ্যে অনেকগুলি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। চুল সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেললে এই জীবাণুগুলির স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে ত্বকে সংক্রমণ বা ফুসকুড়ির আশঙ্কা বাড়ে। চুল থাকলে এই ব্যাকটেরিয়া নিজেদের জায়গায় টিকে থাকতে পারে এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষা তৈরি করে।
৩. ঘাম কম করে না, তবে ঘামের গন্ধ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে
অনেকেই মনে করেন, বাহুমূলে চুল থাকলে ঘামের গন্ধ বাড়ে। কিন্তু আদতে, গন্ধ হয় ব্যাকটেরিয়া আর ঘামের সংমিশ্রণে। চুল থাকলে ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যায় না—কিন্তু সেই চুলে থাকা তেল ও গ্রন্থিগুলি একধরনের সুরক্ষা স্তর তৈরি করে, যাতে ত্বক অতিরিক্ত ঘাম শোষণ করে ফেলে এবং সরাসরি ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে।
৪. ত্বক কাটা বা জ্বালাভাবের ঝুঁকি থাকে না
রেজার বা ওয়াক্স ব্যবহারে অনেক সময়ই বগলের ত্বকে কেটে যাওয়া, জ্বালা, ইনগ্রোন হেয়ার (ত্বকের ভিতরে ঢুকে যাওয়া চুল), ফোড়া বা র্যাশের সমস্যা দেখা দেয়। চুল না কাটলে এই ঝুঁকি প্রায় থাকে না বললেই চলে। বিশেষত স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য এটি একটি নিরাপদ পন্থা।
তাহলে কি চুল কাটাই যাবে না?
তা নয়। ব্যক্তিগত পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী কেউ চাইলে চুল কাটতেই পারেন। তবে ‘চুল মানেই অপরিচ্ছন্নতা’ একথা কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভাবে পুরোপুরি ঠিক নয়।
