আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রথম দর্শনে মনে হবে হ্যারি পটারের জাদুর দুনিয়া থেকে উঠে আসা কোনও যান, অথবা কার্টুন ফিল্মের পাতা থেকে গাড়িটি উঠে এসেছে সটান রাস্তায়। কিংবা সাধারণ গাড়িকে যেন কেউ দু'পাশ থেকে চেপে ধরে হাস্যকর ভাবে সরু বানিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু আজগুবি কল্পনা নয়, ইতালির রাস্তায় সত্যিই দেখা গিয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে স্লিম গাড়ি। গাড়িটিও পুরোদস্তুর যাত্রীবাহী গাড়ি, চলে বিদ্যুতে। ফিয়াট প্যান্ডার এই সংস্করণটি চওড়ায় মাত্র ১৯.৬ ইঞ্চি বা ৫০ সেন্টিমিটার। চালকের পিছনে বসতে পারেন আরও এক জন, তবে তাঁকে বেশ রোগাসোগা হতে হবে। এই ‘আজব’ গাড়িকে ঘিরে নেটদুনিয়ায় রীতিমতো শোরগোল। কেউ একে বলছেন কার্টুনের মতো, কেউ বলছেন ‘কুৎসিত’, কারও মতে এটি নিছক ‘পাগলামি’র ফসল।
রেডিটের মতো নেটমাধ্যমে হাসির রোল উঠেছে। এক নেটিজেন রসিকতা করে লিখেছেন, “এ তো ফ্লিনস্টোনদের গাড়ি, ব্রেক কষতে হবে না। গাড়ি থামাতে পা দু’টো মাটিতে নামিয়ে দিলেই চলবে।” অপর এক জনের মন্তব্য, “এই গাড়ি বাইক চলাচলের রাস্তাতেও স্বচ্ছন্দে ঢুকে পড়তে পারে” জনপ্রিয় চরিত্র ‘মিস্টার বিন’-এর কথাও টেনে এনেছেন অনেকে।
এই অভাবনীয় গাড়ির কারিগর হলেন ৩০ বছর বয়সি ইতালীয় মেকানিক আন্দ্রেয়া মারাজ্জি। ১৯৯৩ সালের একটি ফিয়াট প্যান্ডা মডেলের সরঞ্জাম দিয়েই তিনি নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন এই যান। সম্প্রতি মিলানের কাছে প্যান্ডিনো শহরে ফিয়াট প্যান্ডার ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক উৎসবে এটি প্রদর্শন করেন তিনি। তাঁর সামনেই এক ব্যক্তি কটাক্ষ করেন, “সামান্য বাতাসেই গাড়িটি উল্টে যেতে পারে!” তবে কটাক্ষ শুনেও মেজেজ হারাননি তিনি। বরং এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন মারাজ্জি। এমনকী ভিড়ের সামনে সজোরে ধাক্কা দিয়ে প্রমাণ করেছেন গাড়িটি কতটা স্থিতিশীল। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি বলেন, “অনেকে ভাবছেন ফুঁ দিলেই এটা উল্টে যাবে, কিন্তু তাঁরা ভুল। দেখুন, একটু ধাক্কা দিলে কেবল টলমল করবে, কিন্তু পড়বে না।”
গাড়িটির ওজন ২৬৪ কেজি, দৈর্ঘ্য ১৩৩ ইঞ্চি। সরু হলেও এতে রয়েছে চারটি চাকা, দু’টি রিয়ার-ভিউ মিরর এবং চালকের দু’দিকে দু’টি দরজা। তবে বনেটের নীচে চার চাকার ইঞ্জিন নয়, রয়েছে একটি ই-স্কুটার থেকে নেওয়া ২৪ ভোল্টের ব্যাটারি ও মোটর। তাই এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিলোমিটার, যা শহুরে রাস্তায় চলার পক্ষে খুবই কম। তবে গতি কম হলে কী হবে, বিশ্বের সবচেয়ে সরু অথচ কার্যকর গাড়ি হিসেবে এটিকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন মারাজ্জি। আপাতত সেই স্বীকৃতির দিকেই তাকিয়ে এই ‘চমকপ্রদ’ গাড়ির কারিগর।
