ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব করবা চৌথ পড়ছে ১০ অক্টোবর। এই দিনটি বিবাহিত নারীদের জন্য শুধু ধর্মীয় নয়, আবেগগত এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রায় ১২ ঘণ্টা খাদ্য ও জলবিহীন উপবাস শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই চাঁদ দেখার পর উপবাস ভাঙার সময় কী খাবেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করে, হজম সহজ করে এবং শক্তি ফিরিয়ে আনে— ক্লান্তি, অ্যাসিডিটি বা পেটের অস্বস্তি এড়াতে সাহায্য করে।
প্রথম ধাপ: ধীরে শুরু করুন, আগে শরীরকে জল দিন
দীর্ঘ উপবাসের পর শরীরের প্রথম প্রয়োজন হলো জল। ছাছ বা মিষ্টি লস্যি সবচেয়ে উপযুক্ত, কারণ এগুলো শরীরের হারানো ইলেকট্রোলাইট ফিরিয়ে দেয় এবং পরিপাকতন্ত্রকে ঠান্ডা রাখে। ডাবের জল, লেবুর জল বা হালকা ফলের রসও ভাল বিকল্প। তবে হঠাৎ করে বেশি জল না খাওয়াই ভাল। প্রথমে অল্প অল্প করে চুমুক দিয়ে শরীরকে অভ্যস্ত হতে দিন।
হালকা এবং পুষ্টিকর খাবারই সেরা
শরীর জল পেয়ে স্বস্তি পাওয়ার পর হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত। উপমা, পোহা বা খিচুড়ি এই সময়ে দারুণ বিকল্প। কারণ এগুলো শরীরে শক্তি দেয় কিন্তু ভারী লাগে না। অল্প পরিমাণে সাবুদানা ক্ষীর বা ডালিয়া খাওয়াও উপকারী। এতে শরীরের গ্লুকোজের ঘাটতি মেটে।
যদি নোনতা কিছু খেতে চান, তবে সবজি দিয়ে স্যুপ, ইডলি বা মুগ ডালের চিলা সঙ্গে চাটনি খেতে পারেন। এগুলো প্রোটিন এবং ফাইবারের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখে, যা উপবাসের পর শরীরের জন্য আদর্শ।
অতিরিক্ত খাবেন না
উপবাসের পর অনেকেই হঠাৎ বেশি খেয়ে ফেলেন। এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। উপবাসের সময় হজমপ্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, তাই ভারী খাবার খেলে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন ধীরে ধীরে খাওয়া শুরু করতে। আগে তরল খাবার, তারপর নরম খাবার, শেষে পূর্ণ আহার।
তেলেভাজা, ঝাল বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলো শরীরে চাপ ফেলে এবং তাকে আরও ডিহাইড্রেট করে। পরিবর্তে তাজা ফল, সেদ্ধ সবজির মতো খাবার খেলে শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি ফিরে আসে।
করবা চৌথ শুধু ভক্তি এবং সংযমের প্রতীক নয়। শরীরের যত্ন নেওয়াও এই ভক্তিরই অংশ। সঠিক খাবার দিয়ে উপবাস ভাঙলে শরীর ধীরে ধীরে শক্তি ফিরে পায়। প্রাকৃতিকভাবে জলীয় ভারসাম্য রক্ষা হয় এবং কোনও অস্বস্তি ছাড়াই সুস্থতা বজায় থাকে।
করবা চৌথে যখন আপনি চাঁদ দেখে উপবাস ভাঙবেন, মনে রাখবেন আপনার শরীরও যত্ন এবং শ্রদ্ধার দাবি রাখে, ঠিক এই পবিত্র রীতির মতোই।
