আজকাল ওয়েব ডেস্ক: কালীপুজো বা ধনতেরাসে বাড়ি, কর্মক্ষেত্র বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লক্ষী গনেশের পুজোর রীতি রয়েছে। সংসারের শ্রীবৃদ্ধি, সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় এই পুজো করা হয়। লক্ষী গনেশ যুগলকে স্থাপিত করে পুজো করার সময় লক্ষ্মী দেবীকে গনেশের কোন পাশে স্থাপন করা হয় এবং কেন, সেই বিষয়ে জানেন না অনেকেই। তাই জেনে নিন আসল রীতি।
ধনতেরাস ও দীপাবলিতে প্রায় প্রত্যেকেই ধনলক্ষ্মী বা লক্ষী গনেশের মুর্তি কিনে বাড়িতে তাদের আমন্ত্রণ জানান পুজোর মাধ্যমে। স্টিল বা পিতল হোক বা বা মাটির, কেও আবার সোনা বা রুপোর লক্ষী গনেশ যুগল কিনে থাকেন। সবাই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী মুর্তি নিয়ে আসেন। পুজোয় জুঁই, গাঁদা গোলাপ ফুল লাগে। স্নান সেরে নতুন ও শুদ্ধ বস্ত্রে এই পুজো করতে হবে। ধূপ ধুনোর গন্ধে চারিদিকে আধ্যাত্মিক পরিবেশ তৈরি করতে পারে। যেখানে মুর্তি যুগলকে স্থাপিত করবেন তার নীচে লাল রঙের কাপড় বিছিয়ে দিন। ঠাকুরের সামনে ঘি বা তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন। ফুল, ফল ও কয়েন দিয়ে পুজো শুরু করুন। প্রথমে গনেশ পুজোর ধ্যান ওম গন গনপতয়ে নমঃ মনে মনে স্মরণ করে গনপতিকে জীবনের সমস্ত বাধা বিঘ্ন দূর করতে অনুরোধ জানান। এবার মা লক্ষ্মীকে সিঁদুরের তিলক দিয়ে ভোগ ও ফল নিবেদন করুন।
শ্রী গনেশ বিঘ্নহর্তা হিসেবে পুজো করা হয়। ভক্তদের জীবনের বাধা বিঘ্ন ও বিপত্তিকে দূরে রাখেন গনেশজি। আবার মা লক্ষী তার ভক্তদের ধন সম্পদ ও ঐশ্বর্যে ভরিয়ে রাখেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এই দুই আধ্যাত্মিক যুগলকে কীভাবে স্থাপন করা উচিত তা সঠিক জানেন না।
অর্ধনারীশ্বরের ধারণা অনুযায়ী শিব ঠাকুর ও মা পার্বতী একই রুপে দুই স্বত্বা হিসেবে বিবেচিত হন। এখানে ভোলানাথের বাম দিক শক্তি ও মেয়েদের আশির্বাদ হিসেবে বিবেচিত হয়। সুতরাং মা পার্বতীর মতোই সব স্ত্রীর স্বামীর বামদিকে স্থান থাকে যে কোনও পুজো, রীতি নিয়ম অনুযায়ী। একই ধারণা থেকে অনেকেই মা লক্ষীকে গনেশের বাম দিকে বসান। আসলে নিয়ম হলো ডানদিকে মা লক্ষ্মীকে স্থাপন করা। যা শুনে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান।দেবতাদের ডানদিকে সবসময় শক্তির অস্তিত্ব দেবীদেরই স্থাপন করার নিয়ম।
মনে রাখবেন, মা লক্ষী ও গণেশজী স্বামী স্ত্রী যুগল নন।তাই লক্ষীকে বাম দিকে না রেখে গনেশের ডান দিকেই রাখার নিয়ম। দেবতাদের ডানদিক সন্মান ও গুরুত্বের জায়গা বলে বিশ্বাস করা যায়। যেখানে মা লক্ষ্মীর স্থান। উভয়েই অশেষ ক্ষমতার অধিকারী হন। মা লক্ষ্মীর মূর্তি স্থাপন করে জীবনে আর সংসারে সুখ সমৃদ্ধির ভারসাম্য বজায় থাকে। বিশ্বাস করা হয় যে, লক্ষী গনেশ যুগলকে একসঙ্গে পুজো করলে আর্থিক স্বচ্ছলতা, দাম্পত্য সুখ ও সংসারের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।
