ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে যুক্ত হল এক নতুন অধ্যায়। রবিবার মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ট্রফি জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। দীর্ঘ প্রায় পঞ্চাশ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে কাপ উঠল ভারতের মেয়েদের হাতে — আর সেই মুহূর্তে গর্জে উঠল গোটা স্টেডিয়াম, উল্লাসে ভরে গেল দেশজুড়ে প্রতিটি হৃদয়। সেই আনন্দে ভাসলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। এই জয় তাঁর কাছে ‘ব্যক্তিগত’। গর্বের।

আজকাল ডট ইন-কে ঋতুপর্ণা বললেন, “খুব খুব গর্বিত। মনে হচ্ছে যেন, এটা নিজের জয়। নিজের দেশের জয়। এটা আমাদের দেশের জন্য একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সাঙ্ঘাতিক সম্মানের এই জয়।”

একজন নারী হিসেবে হরমনপ্রীত কৌরদের এই ঐতিহাসিক জয় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর মনে এক বিশেষ আবেগ জাগিয়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেটকে ‘পুরুষদের খেলা’ হিসেবে দেখা হলেও, ভারতের মেয়েরা আবারও সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে— আর তাতেই ভীষণ গর্বিত ও আনন্দিত অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “ভারতে পুরুষদের ক্রিকেট টিমের সাফল্যে কথা আমরা সকলেই জানি। সেই টিম একাধিক বিশ্বকাপ জয় করে এনেছে। কিন্তু আমাদের মহিলারাও যে কোনওভাবে পিছিয়ে নেই, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। তাঁদের আত্মপ্রত্যয় এতটাই যে, তাঁরা বিশ্বকাপ ছিনিয়ে আনলেন। এটা আমাদের কাছে একটা মহাপ্রাপ্তি। এই দিনটা সত্যিই বিশেষ। এই জয় ক্রিকেটের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”

নারীশক্তির কণ্ঠস্বর হিসাবে ঋতুপর্ণা সবসময়ই দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। নিজের কর্মজীবনেও তার ছাপ স্পষ্ট— একদিকে সংসার ও সন্তানদের দায়িত্ব, অন্য দিকে কাজের প্রতি অগাধ নিষ্ঠা। প্রচলিত নিয়মের বাঁধন ছিঁড়ে একের পর এক সফল ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। তাই ভারতের মেয়েদের এই ঐতিহাসিক জয় তাঁর কাছে শুধু আনন্দের নয়, গর্ব ও সম্মানেরও বটে। অভিনেত্রীর কথায়, “মহিলাদের এই জয়কে আমি মন থেকে সাধুবাদ জানাই। পুরো টিমকে আমার সেলুট। আমি ভীষণ আপ্লুত। ক্যাপ্টেনকেও আমার শুভেচ্ছা। আজ ওঁরা আমাদের দেশকে গর্বিত করেছেন। ওঁদের পরিবারের প্রতিও আমার অনেক ভালবাসা। সব যুদ্ধেই যেন ওঁরা এভাবেই জয়ী হন।”

বেনজির এক ইতিহাস গড়লেন হরমনপ্রীত কৌররা। দু’বার ফাইনালে পৌঁছেও ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল, কিন্তু এবার আর নয়— তৃতীয়বারেই স্বপ্ন পূরণ। কথায় বলে, তিন নম্বর বারে ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়, কিন্তু ভারতের মেয়েরা সেই ধারণাকেই ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন। ক্রিকেট মাঠে তাঁদের এই জয় যেন গোটা দেশের জয়। ক্রীড়ার গণ্ডি পেরিয়ে এখন এই সাফল্য উদ্‌যাপন করছে সমগ্র ভারত — উৎসবের আলোয় ভাসছে প্রত্যেক ঘর, প্রত্যেক হৃদয়।