মহিলাদের জন্য, বিশেষ করে ৫০-এর পরে, শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মেনোপজ-পরবর্তী সময় দেহে নানা পরিবর্তন আসে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হার্ট, হজম এবং হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কিছু সহজ পরিবর্তন বড় পার্থক্য আনতে পারে।

পুষ্টিবিদ দীপশিখা জৈন, পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রতিটি মহিলার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ খাবারের পরামর্শ দিয়েছেন। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত ভিডিওয় তিনি এমন খাবারের কথা বলেছেন, যা মেনোপজের পর মহিলাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজম শক্তিশালী করতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

কালোজিরে

দীপশিখা জানিয়েছেন, কালোজিরে শুধু প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে না, এটি ইমিউনিটি বাড়াতেও কাজ করে। ৫০-এর বেশি বয়সি মহিলাদের জন্য এটি আর্থ্রাইটিসের সম্ভাবনাও কমায়। এছাড়া, ওয়েবএমডি অনুসারে, কালোজিরে মেনোপজের সময় হট ফ্ল্যাশ এবং মুড সুইংয়ের মতো উপসর্গও কমাতে সাহায্য করে, যা এই পরিবর্তনশীল সময়ে আরাম এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

বীটরুট

দীপশিখা বলেন, “আপনার মা যদি প্রতিদিন বীটরুট খান, তা তাঁর রক্তচাপ কমাতে এবং হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে।” হেলথলাইন অনুযায়ী, বীটরুট রক্তনালীর কার্যকারিতা বাড়ায় এবং মেনোপজের পর মহিলাদের হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়।

ফ্ল্যাক্সসিড

ফ্ল্যাক্সসিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোএস্ট্রোজেন থাকে। দীপশিখা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ফ্ল্যাক্সসিড খাওয়া হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাদের মেনোপজের পর স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।

ডার্ক চকোলেট

ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। দীপশিখা ব
লেছেন, প্রতিদিন ডার্ক চকলেট খেলে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং এনার্জি লেভেল বাড়ে। হেলথলাইন অনুযায়ী, ডার্ক চকলেটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ব্লাড সুগার ম্যানেজ করতে সাহায্য করে।

চিয়া সিডস

চিয়া সিডসে স্বাস্থ্যকর ফাইবার থাকে। দীপশিখা বলেন, “আপনার মা যদি প্রতিদিন চিয়া সিডস খান, তা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে, বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নত করতে এবং হজমের স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করবে।”

পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্য বজায় রাখা মানে শুধু শরীরের যত্ন নয়, মানসিক স্বস্তিও নিশ্চিত করা। নিয়মিত সক্রিয় থাকা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং মানসিক চাপ কমানোর অভ্যাসও দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ছোট ছোট পরিবর্তন, সচেতন জীবনধারা এবং নিজের প্রতি যত্নশীল মনোভাবই মেনোপজ পরবর্তী জীবনকে আরও শক্তিশালী, সুখী ও আত্মনির্ভরশীল করে তোলে। তাই সব দিক থেকেই নিজের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।