বলিউডের তারকাদের নিখুঁত টোনড দেহ দেখে আমরা সবাই অবাক হয়ে যাই। জানতে চাই তাঁদের এই ফিটনেসের রহস্য। দীপিকা পাড়ুকোনের অ্যাবস হোক বা রণবীর কাপুরের টোনড শরীর বা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মেদহীন কোমর, এই তারকাদের দেখে আমাদের মধ্যেও একই ধরনের ফিটনেসের আকাঙ্ক্ষা জাগে। কিন্তু পর্দার পিছনে আসলে কী ঘটে? কতটা পরিশ্রমের ফলে এরকম চেহারা পান নায়ক-নায়িকারা? সেলিব্রিটি নিউট্রিশনিস্ট পূজা মাখিজা এই রহস্য উন্মোচন করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা যখন তারকাদের দিকে তাকাই, আমরা শুধু তাদের বাহ্যিক অবস্থানটা দেখি। এটা শুধু ঈশ্বরপ্রদত্ত বা সাজসজ্জা নয়। তাঁরা সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করেন। তাঁরা প্রতিটি নিয়ম মেনে চলে। যে ভাবে যা শেখানো হয়ে, সেটি অনুসরণ করেন। তাই তাঁদের এরকম আকর্ষণীয় চেহারা তৈরি হয়।”

তিনি আরও তিন জিনিসের কথা বলেছেন যা মনের মতো চেহারা পেতে সাহায্য করবে

অধ্যবসায় 
ডায়েটে অধ্যবসায় মানে হল স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা, যেমন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা, যা ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। ‘ক্র্যাশ ডায়েট’ এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা অতিরিক্ত খাওয়া বা খাদ্যজনিত সমস্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য কৌশলগুলি হল খিদে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক খাবার বেছে নেওয়া, শারীরিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকা, পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া এবং সাময়িক ওজন ঝরানোর লক্ষ্য না রেখে স্থায়ী জীবনধারার পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করা।

ধারাবাহিকতা
স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং অভ্যাস নিয়মিতভাবে মেনে চলা। এর মধ্যে রয়েছে ধীরে ধীরে ছোট পরিবর্তন আনা, নিয়মিত খাবারের সময় নির্ধারণ করা, খাবার প্রস্তুত করা এবং খুব কঠোর বা অপ্রয়োজনীয় পদ্ধতি এড়ানো। শুরুতে বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা, কী কী খাবেন, তার পরিকল্পনা করা এবং অতি নিখুঁত হওয়ার পরিবর্তে ধাপে ধাপে উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।

ঘড়ির কাঁটা ধরে খাওয়া 
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া সফল ডায়েট প্লানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত খাবারের সময় খিদে নিয়ন্ত্রণ, রক্তে শর্করার মাত্রা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করে, যা ওজন কমানো এবং বজায় রাখতে সহায়ক। নির্দিষ্ট সময়সূচি স্থাপন করা, পুষ্টিকর খাবারের দিকে মনোনিবেশ করা এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যাতে খাবারের একটি ধারাবাহিক উইন্ডো তৈরি হয়।

তারকাদের মতো  ফিট এলং টোনড শরীর পাওয়া শুধু জিনগত উপহার বা বাহ্যিক সাজসজ্জার ফল নয়। এর পিছনে থাকে নিয়মিত পরিশ্রম, ধৈর্য, এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন। যেমন পুষ্টিবিদ বলেছেন, স্থায়ী পরিবর্তন আসে তখনই, যখন আমরা খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুম এবং মানসিক ভারসাম্যের প্রতি নিয়মিত মনোযোগ দিই। তাই সুস্থ এবং আকর্ষণীয় শরীরের আসল রহস্য লুকিয়ে আছে ধারাবাহিকতা, অধ্যবসায় এবং সঠিক অভ্যাসে। যা প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গড়ে ওঠে।