আজকাল ওয়েবডেস্ক: সকাল সন্ধে ইনস্টাগ্রাম খুলতেই দেখা যায় কলেজের বন্ধুরা পার্টি করছে। হ্যাশট্যাগে ঝলমল করছে হ্যাশট্যাগ উইকেন্ডভাইবস! ফোনটা পাশে রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আপনি আবার বইয়ের পাতায় ফিরে গেলেন। কিছুক্ষণ পরেই খেয়াল পড়ল—এই একাকিত্বটা, এই নিস্তব্ধতাটাই যেন বড্ড শান্তি দিচ্ছে। আপনার মন বলছে, “মিস করাই ভাল!”
এই অনুভবেরই আজকের নাম জোমো—অর্থাৎ জয় অব মিসিং আউট।
এক সময়ের ফোমো (ফিয়ার অব মিসিং আউট) ছিল নতুন প্রজন্মের অন্যতম আকুতি। প্রত্যেকটা আপডেট না জানলে ঘুম হত না, সেখানে এখন এক নতুন ট্রেন্ড দানা বাঁধছে—সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ইচ্ছে করে দূরে থাকা, সকল আড্ডা থেকে নিজের ইচ্ছায় সরে যাওয়া। আর নিজের ইচ্ছে মত নিজের সঙ্গে সময় কাটানো। এই সব মিলিয়েই হই হল্লা থেকে দূরে থাকাই যেন স্বস্তির।
নতুন যুগ, নতুন মানসিকতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিমারি (পড়ুন লকডাউন) আমাদের জীবনের ছন্দটাই পাল্টে দিয়েছে। দিনভর ভিডিও কলে ক্লান্ত চোখ আর পর্দার আড়ালে হারিয়ে যাওয়া ‘রিয়েল কানেকশন’-এর খোঁজে অনেকেই ধীরে ধীরে বুঝছেন—সব জায়গায় উপস্থিত না থাকলেও চলে, সব কিছু না জানলেও চলে, বরং এই না থাকাটাই অনেক সময় মানসিক শান্তির আশ্রয় হয়ে দাঁড়ায়। অর্থাৎ এই ‘জোমো’ মূলত এক ধরনের আত্ম-সচেতনতা। নিজেকে বোঝা, নিজের জন্য সময় বার করা। প্রযুক্তির দাপটে যখন আমাদের মস্তিষ্ক সর্বক্ষণ ব্যস্ত, তখন নিজেকে ‘আনপ্লাগ’ করা। এক ধরনের ‘মানসিক ডিটক্স’।
কেন জেনারেশন জি এতটা আকৃষ্ট জোমোতে?
একটা গোটা প্রজন্ম বড় হয়েছে ইন্টারনেট আর ইনস্টাগ্রামের আলো-ছায়ায়। কিন্তু সেই গ্ল্যামারাস দুনিয়ার আড়ালে যে ক্লান্তি, চাপ, তুলনা আর অস্থিরতা জমা পড়ে, তা তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। সেই কারণেই স্ক্রিনের বদলে মুখ তুলে আকাশ দেখা যেন এক ধরনের আরাম এনে দেয় মনে।
ফোমো-র যুগে যাঁরা সারাক্ষণ চোখ রেখেছিলেন অন্যের জীবনে, তাঁরা এখন নিজের ভেতরে ডুব দিতে শিখেছেন। জয় অব মিসিং আউট মানে কারও থেকে দূরে থাকা নয়, বরং নিজের কাছে ফেরা। হয়তো এখানেই আনন্দের আসল মানে খুঁজে পাচ্ছে এই প্রজন্ম—জয় অব মিসিং আউট!
