আজকাল ত্বকের যত্ন নিয়ে মানুষের সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। সকলেই চায় ত্বক হোক নরম, হাইড্রেটেড ও উজ্জ্বল। সেই কারণেই অনেকেই ঘরোয়া উপায়ের দিকে ঝুঁকছেন। চাল ধোয়া জল বা রাইস ওয়াটার তেমনই একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা দীর্ঘদিন ধরেই ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে। ত্বক ময়েশ্চারাইজড রাখা, পিগমেন্টেশন কমানো এবং স্কিন হাইড্রেটেড রাখতে অনেকেই এটি ব্যবহার করেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, রাতে ঘুমোনোর আগে মুখে চালের জল লাগিয়ে রাখা কি আদৌ নিরাপদ?
স্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যেকের ত্বকের ধরন আলাদা। যা একজনের জন্য উপকারী, তা অন্য জনের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। তাই চালের জল ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি বুঝে নিতে হবে আপনার ত্বক ড্রাই, অয়েলি না সেনসিটিভ।
রাতে ঘুমের সময় ত্বকের রিপেয়ার প্রক্রিয়া চলে এবং রোমকূপ কিছুটা খোলা থাকে। এই কারণেই অনেকের ধারণা, রাতভর চালের জল বা রাইস ওয়াটার লাগিয়ে রাখলে ত্বক আরও বেশি উপকার পাবে। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শুরুতে অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করাই নিরাপদ। এতে বোঝা যাবে ত্বক সেটি সহ্য করতে পারছে কি না। কোনও রকম সমস্যা না হলে ধীরে ধীরে রাতভর ব্যবহারের দিকে যাওয়া যেতে পারে।
রাতভর মুখে রাইস ওয়াটার লাগানোর উপকারিতা
ত্বক হাইড্রেট থাকে
সঠিক পরিমাণে ও সঠিকভাবে ব্যবহার করলে রাইস ওয়াটার ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে সারা রাত ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকে এবং সকালে ত্বক নরম ও সতেজ হয়।
ত্বকে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা আসে
নিয়মিত রাতে রাইস ওয়াটার ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। পিগমেন্টেশন কমে এবং রোদে পোড়া বা ট্যানিংজনিত সমস্যাতেও উন্নতি দেখা যায়।
ফোলা ভাব ও লালচে ভাব কমায়
মুখে ফোলাভাব, জ্বালা বা লালচে ভাব থাকলে রাইস ওয়াটার আরাম দিতে পারে। এটি ত্বককে শান্ত করে এবং প্রাকৃতিক কুলিং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে।
ত্বকের সুরক্ষা বাড়ায়
রাইস ওয়াটারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ইউভি রশ্মি, দূষণ ও বাইরের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
রাতভর রাইস ওয়াটার লাগানোর ঝুঁকি
ড্রাই স্কিনে সমস্যা: যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, তাদের ক্ষেত্রে রাতভর ব্যবহার করলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
ইরিটেশনের আশঙ্কা: কারও কারও ক্ষেত্রে জ্বালা বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।
ব্রণ ও পোরস ব্লক হওয়া: অতিরিক্ত ব্যবহার করলে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণ বা পিম্পলের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই কারণে শুরুতে অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা এবং ত্বকের প্রতিক্রিয়া ভাল করে লক্ষ্য করা জরুরি।
কীভাবে সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন
প্রথমে চাল ভাল করে ধুয়ে সেই জল আলাদা করে রাখুন।
হালকা উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন।
আঙুলের ডগা দিয়ে আলতোভাবে চালের জল মুখে লাগান।
ত্বক সেনসিটিভ হলে ১৫–২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ধীরে ধীরে ত্বক অভ্যস্ত হলে রাতভর ব্যবহার করা যেতে পারে।
