হাসি মানুষের সবচেয়ে বড় অলংকার। মিষ্টি হাসি মুহূর্তে মন জয় করে নিতে পারে। কিন্তু সেই হাসির আসল রূপ—মুক্তোর মতো সাদা দাঁত—যদি হলদেটে, দাগ পড়া বা ব্যথায় জর্জরিত হয়, তা হলে নানা সমস্যা দেখা যায়। স্ট্রেস, ফাস্টফুড, চা-কফি আর অনিয়মের ভিড়ে দাঁতের যত্ন যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
অনেকেই ভাবেন দাঁতের সমস্যা তো শুধু বয়স বাড়লে হয়। কিন্তু আজকাল কম বয়সেই অনেকে ক্যাভিটি, মাড়ির রোগ, সেনসিটিভিটি এবং মুখের দুর্গন্ধে ভুগছেন। এর মূল কারণ অযত্ন আর ভুল অভ্যাস।
 
 হেলথলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিদিন দু’বার দাঁত ব্রাশ করা ও ফ্লস ব্যবহার দাঁতের পাশাপাশি মাড়ির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
ওয়েবএমডি বলছে, দুধ, দই, পনির, শাকসবজি ও তাজা ফল দাঁতকে শক্ত করে, মাড়িকে সুস্থ রাখে।
দাঁতের যত্নের ৫টি সহজ ঘরোয়া জাদু
সফট-ব্রিসল ব্রাশ ও ফ্লোরাইড টুথপেস্ট
 
 শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁতে যুদ্ধ নয়—এতে শুধু ক্ষতি বাড়ে। দিনে অন্তত দু’বার,  দু’মিনিট ব্রাশ করুন।
ফ্লসিংকে অভ্যাসে আনুন
 
 মাড়ির ফাঁকে জমে থাকা খাবারের কণা দুর্গন্ধ ও ক্যাভিটির প্রধান কারণ। প্রতিদিন ফ্লস করলে মুখ থাকবে সতেজ।
জিভ পরিষ্কার করুন
 
 জিভে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর না করলে দুর্গন্ধ যাবে না। প্রতিদিন টাং ক্লিনার ব্যবহার করুন।
চিনি ও টক খাবারে লাগাম টানুন
 
 চকোলেট, কোল্ড ড্রিঙ্ক, লেবুর জল—সবই পরিমিত পরিমাণে নিন। চিনি ও অ্যাসিড দাঁতের এনামেল গলিয়ে দেয়।
নিয়মিত ডেন্টিস্ট চেকআপ
 
 বছরে দু’বার ডেন্টিস্ট দেখান। সমস্যা আগেই ধরা পড়লে বড় চিকিৎসার খরচ ও কষ্ট দুটোই বাঁচবে।
খাদ্যাভ্যাসে যত্ন
গাজর, আপেল, শসা—এগুলো চিবোলে দাঁতের প্ল্যাক প্রাকৃতিকভাবে কমে। একে বলে প্রকৃতির ব্রাশ।
 
 দাঁতের ব্যথা এমন এক কষ্ট যা খাওয়া, কথা বলা, এমনকি হাসিও কঠিন করে তোলে। অনেকেই এই ব্যথা সহ্য করে যান, ভাবেন ‘ঠিক হয়ে যাবে’। কিন্তু দাঁতের সমস্যা সময়মতো চিকিৎসা না করালে শুধু দাঁত নয়, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়ায়। ছোট্ট একটি গর্ত (ক্যাভিটি) অবহেলা করলে পরবর্তীতে রুট ক্যানাল বা দাঁত তোলার মতো জটিল চিকিৎসার মুখোমুখি হতে হয়, যা সময়, খরচ এবং মানসিক চাপ—সবকিছুই বাড়ায়।
বিপদের সঙ্কেত উপেক্ষা নয়
দাঁতের ব্যথা, রক্তপাত, সংবেদনশীলতা বা মুখের দুর্গন্ধ—এসব উপসর্গকে অবহেলা করবেন না। এগুলো শরীরের দেওয়া সতর্ক সংকেত।
দাঁত শুধু খাবার চিবোনোর যন্ত্র নয়—এ আপনার আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। প্রতিদিন সামান্য যত্ন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর সময় দিলে মুক্তোর মতো হাসি সারাজীবন আপনার সঙ্গী হবে। কারণ, হাসি হারালে শুধু মুখ নয়, মনও ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
