একটানা গরমের পর বর্ষা স্বস্তি নিয়ে আসে বটে। কিন্তু বৃষ্টির মরশুমে সবকিছুরই বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ব্যতিক্রমী নয় রান্নাঘরের খাবারের সামগ্রীও। সামান্য অসতর্ক হলেই হানা দেয় রোগজীবাণু, সঙ্গে পোকমাকড়ের উপদ্রব তো রয়েইছে! বিশেষ করে আটা-ময়দায় পোকা ধরে নষ্ট হয়ে যেতে দেখা যায়। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, রান্নাঘর যতই পরিষ্কার রাখুন না কেন, এই ছোট পোকাগুলো ঠিক আপনার আটা বা ময়দার কৌটো খুঁজে পেয়ে যায়। অনেক যত্ন করে গুছিয়ে রাখলেও নিশ্চিতে জীবনযাপন করে পোকার দল। কিন্ত কীভাবে বদ্ধ জায়গায় থাকতে পারে পোকামাকড়? জানেন কেন এদের বর্ষাকালে উপদ্রব বাড়ে? কী করলে আটা-ময়দা ভাল রাখতে পারবেন? জেনে নিন বিশদে-
স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পোকামাকড় বেশি বাড়ে। আসলে বর্ষাকালে বাতাসে প্রচুর আর্দ্রতা থাকে। এই আর্দ্রতা ময়দা এবং আটার মধ্যে প্রবেশ করে স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি করে। যা পোকামাকড় বেড়ে ওঠার অন্যতম প্রধান কারণ। যদি ময়দা বা আটা ঠিকমতো না রাখলে পোকার উপদ্রবে দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
নষ্ট আটা-ময়দায় ছত্রাক বা পোকামাকড়ের চিহ্ন থাকতে পারে। ফলে এর থেকে তৈরি রুটি খেলে পেটে ব্যথা, গ্যাস, খাদ্যে বিষক্রিয়া বা হজমের সমস্যা হতে পারে। যদি আটা বা ময়দা অদ্ভুত গন্ধ থাকে বা এর রং পরিবর্তিত হয়ে থাকে, তাহলে তা খাওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুনঃ রাতে ব্রাশ না করেই ঘুমিয়ে পড়েন? জানেন এই অভ্যাস কীভাবে আপনার মৃত্যুর বিপদ ডেকে আনে?
নষ্ট ময়দা কিংবা আটা থেকে কিছুটা বাসি বা পচা গন্ধ বের হয়। এর রং বাদামি বা ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে, হাত দিলে স্যাঁতসেঁতে বা আঠালোও মনে হয়। মাঝে মাঝে এতে ছোট পোকা বা লার্ভা দেখা যায়। আটা বা ময়দা ছেঁকে নেওয়ার সময় যদি কোনও পোকা দেখতে পান তাহলে তা খাওয়া উচিত নয়।
কীভাবে আটা-ময়দা ভাল রাখবেন
• অল্প পরিমাণে কিনে সংরক্ষণ করুনঃ বর্ষাকালে বেশি পরিমাণে গম বা আটা না কেনাই ভাল। যতটা প্রয়োজন, কেবল ততটাই কিনুন।
• এয়ারটাইট কৌটোয় রাখুনঃ আটা ও ময়দা বাতাস ঢুকতে পারে না এমন বায়ুনিরোধক কৌটা বা কাচের বয়াম ব্যবহার করুন।
• প্রাকৃতিক পোকা প্রতিরোধক ব্যবহার করুনঃ আটা বা ময়দার কৌটায় শুকনো নিমপাতা, তেজপাতা বা রসুনের কোয়া দিয়ে রাখলে পোকা হওয়া আটকাতে পারবেন।
• ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে রাখুনঃ যে জায়গায় আটা বা ময়দা রাখবেন তা যেন স্যাঁতসেঁতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে কাঠের তক্তার ওপর রাখুন। এতে নিচের আর্দ্রতা উপরে উঠে আসবে না।
• শুকনো চামচ ব্যবহার করুনঃ আটা বা ময়দা বার করার জন্য সবসময়েই শুকনো চামচ ব্যবহার করুন। নচেৎ কৌটোয় স্যাঁতসেতে ভাব থাকবে।
• পুরনো-নতুন মেশাবেন নাঃ পুরনো ও নতুন আটা একসঙ্গে মেশাবেন না। নতুনভাবে রাখার আগে কৌটো ২–৩ দিন ভালভাবে রোদে শুকিয়ে নিন।
• এয়ারটাইট কৌটায় রাখুনঃ প্রতি ১৫–২০ দিনে একবার কৌটা খালি করে ধুয়ে আবার শুকিয়ে ব্যবহার করুন।
