প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি চায়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কলার খোসা, তেজপাতা, দারচিনি এবং লবঙ্গ মিশিয়ে তৈরি করা এক বিশেষ চা স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে বেশ চর্চিত। সহজলভ্য উপাদান দিয়ে তৈরি এই পানীয় শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং নানা উপকারিতায় ভরপুর।

উপাদানগুলো কেন বিশেষ?

কলার খোসা
কলার খোসায় রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম। এগুলো শরীরের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এছাড়া খোসার প্রাকৃতিক যৌগগুলো লিভার ডিটক্সে সাহায্য করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

তেজপাতা
তেজপাতায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং শরীরের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সহায়ক বলে মনে করা হয়।

দারচিনি
দারচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে পরিচিত। এছাড়া এটি প্রদাহ কমাতে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং হৃদ্‌স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। গাঢ় সুগন্ধ যুক্ত এই মসলা চায়ের স্বাদও অনেক বাড়িয়ে দেয়।

লবঙ্গ
লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল নামক যৌগ, যা শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা কমায়, হজমে সাহায্য করে এবং অগ্ন্যাশয়ের স্বাস্থ্যেও কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এই চায়ের সম্ভাব্য উপকারিতা

প্রদাহ কমায়
চারটি উপাদানই অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণে সমৃদ্ধ, ফলে শরীরের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

রক্তসঞ্চালন উন্নত করে
দারচিনি, তেজপাতা ও লবঙ্গ রক্তসঞ্চালনকে সক্রিয় রাখে। এতে হৃদস্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং শরীরে অক্সিজেন পৌঁছনোর প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয়।

অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক
দারচিনি এবং লবঙ্গ ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উল্লেখ আছে। ফলে অগ্ন্যাশয়ের কিছু সমস্যায় উপকার পাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি এটি ডায়াবেটিস রুখতেও সাহায্য করে।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এই মিশ্রণ শরীরকে রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে এবং শীতকালীন সংক্রমণ কমাতে পারে।


লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়ক
কলা খোসার ফাইটো-নিউট্রিয়েন্ট এবং দারচিনি-লবঙ্গের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারে।

কীভাবে প্রস্তুত করবেন?

এক লিটার জলে
১টি কলার খোসা
২টি তেজপাতা
১টি দারচিনির টুকরো
১৫টি লবঙ্গ
সব একসঙ্গে ফোটান।
১০–১২ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন।
চাইলে মধু যোগ করা যেতে পারে।

যাঁদের অ্যালার্জি আছে বা বিশেষ কোনও রোগে ভুগছেন, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত সেবন থেকে বিরত থাকাই ভাল। দিনে এক থেকে দু’কাপ যথেষ্ট।