শুধু ওজন বা বিএমআই নয়, বর্তমানে স্বাস্থ্যঝুঁকি বোঝার আরেকটি সহজ উপায় খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যা হল গলার পরিধি। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, একজন মানুষের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকী ঘুমজনিত সমস্যার ঝুঁকি কতটা তা গলার আকার দেখে বোঝা যায়। গলার মাপ এখন আর শুধু পোশাকের হিসাব নয়, এটি হতে পারে আপনার শরীরের স্বাস্থ্যঝুঁকির সতর্কবার্তা। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত গলার পরিধি মেপে রাখা এবং জীবনধারায় সচেতন পরিবর্তন আনলেই বড় রোগের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।
কেন গলার পরিধি গুরুত্বপূর্ণ? আসলে গলার চারপাশে যে ফ্যাট জমে, তাকে শুধু বাহ্যিক ফ্যাট নয়, ভিসেরাল ফ্যাট ধরা হয়। এটি শরীরের ভেতরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঘিরে জমে গিয়ে নানা বিপজ্জনক রোগের কারণ হতে পারে। এই ফ্যাট রক্তে অতিরিক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ছড়িয়ে দেয়। এর ফলে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স, উচ্চ রক্তচাপ, এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে এগুলো হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
আরও পড়ুনঃ অর্থ-সম্পদ থেকে শান্তি,কচ্ছপের মূর্তিই আনবে সব! বাড়িতে কোথায় রাখলে আসবে সৌভাগ্য?
কোন মাপে ঝুঁকি বেশি
পুরুষদের ক্ষেত্রে গলার মাপ ৪৩ সেমি (১৭ ইঞ্চি) বা তার বেশি হলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৫–৩৬ সেমি (১৪–১৫.৫ ইঞ্চি) হলেই সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই মাপ অতিক্রম করলে হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত স্পন্দন, উচ্চ কোলেস্টেরল, এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া-র ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়।

বিএমআই-এর সীমাবদ্ধতা
বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) শরীরের ওজন-উচ্চতার অনুপাত জানায় বটে, কিন্তু শরীরে কোথায় ফ্যাট জমছে তা বলে না। অনেক সময় পেট বা কোমরের মাপ বদলালেও গলার মাপ স্থিতিশীল থাকে। তাই গলার মাপ একটি নির্ভরযোগ্য সূচক হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএমআই-এর পাশাপাশি গলার পরিধি মাপলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও নির্ভুলভাবে ধরা যায়।
কীভাবে ঝুঁকি কমাবেন
*নিয়মিত ব্যায়াম—বিশেষ করে কার্ডিও ও ওয়েট ট্রেনিং করলে গলার ফ্যাট কমে।
*সুষম খাদ্য—তেল-চর্বি কম এবং শাকসবজি, ফল, ডাল ও প্রোটিনভিত্তিক খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
*পর্যাপ্ত ঘুম—ঘুমের অভাব বিপাক ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ওজন ও গলার মাপ বাড়াতে পারে।
