আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘সখী ভালোবাসা কারে কয়?’ এই প্রজন্মের এমন প্রেম দেখলে রবি ঠাকুর কি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতেন? সে অবিশ্যি এখন আর জানা সম্ভব নয়। তবে বর্তমানে দুনিয়ায় ভালবাসার সংজ্ঞা যে নতুন নতুন অক্ষরে লেখা হচ্ছে তাই নিয়ে কোনও মতানৈক্য নেই। এমনই এক প্রেমের নজিরের সাক্ষী থাকল বিশ্ব। তাও এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মাধ্যমে। 
টানা ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে, যাবতীয় শারীরিক ও মানসিক প্রতিকূলতাকে জয় করে দীর্ঘতম চুম্বনের বিশ্বরেকর্ড গড়লেন থাইল্যান্ডের এক দম্পতি। এই অভূতপূর্ব কীর্তি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পাতায় তাঁদের নাম খোদাই করে দিয়েছে। তবে শুধু রেকর্ড নয়, এই ঘটনা জন্ম দিয়েছে এক নতুন বিতর্কেরও- এটা কি আদৌ ভালবাসার চরম প্রকাশ, নাকি সহজে জনপ্রিয়তা পাওয়ার এক উপায় মাত্র?

ঘটনার প্রেক্ষাপট থাইল্যান্ডের পর্যটন শহর পাটায়া। সেখানে আয়োজিত এক অভিনব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন এক্কাচাই ও লাকসানা তিরানারাত নামের এক দম্পতি। প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল বেশ কঠিন। চুম্বনরত অবস্থায় ঠোঁট আলাদা করা যাবে না এক মুহূর্তের জন্যও। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। ঘুমানো বা বসার পর্যন্ত অনুমতি নেই। স্ট্র দিয়ে জল বা তরল খাবার খাওয়া যেতে পারে কিন্তু ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরানো চলবে না কিছুতেই। এমনকী শৌচাগার ব্যবহারের সময়েও জারি রাখতে হবে চুম্বন। সামান্য বিচ্যুতি ঘটলেই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যেতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘ধরবে নাকি?’ পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন প্রযোজক! টাকার বিনিময়ে সঙ্গমও করেন কামসূত্রের নায়িকা?
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত বীর্যপাতে মৃত্যু! শুক্রাণু দান করার নেশায় ডাক্তারি পড়ুয়ার করুণ পরিণতি জানলে চোখে জল আসবে

এমন কঠিন চ্যালেঞ্জে একে একে বাকি প্রতিযোগীরা হার মানলেও, এক্কাচাই ও লাকসানা ছিলেন অবিচল। প্রায় আড়াই দিন ধরে তাঁরা সমস্ত নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। কিন্তু ঠোঁট যেন আঠা দিয়ে আটকানো ছিল তাঁদের। এই ধৈর্য ও পারস্পরিক বোঝাপড়া দেখে অবাক হয়ে যান আয়োজক থেকে শুরু করে উপস্থিত দর্শকেরা। অবশেষে যখন ঘড়ির কাঁটা ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড অতিক্রম করে, তখন ক্ষান্ত দেন দু’জন। তৈরি হয় দীর্ঘতম চুম্বনের বিশ্বরেকর্ড।
এই অসামান্য কৃতিত্বের পুরস্কার হিসেবে দম্পতি পেয়েছেন নগদ অর্থ এবং দু’টি হিরের আংটি। তবে তার চেয়েও বড় প্রাপ্তি বিশ্বজোড়া খ্যাতি। কিন্তু এই খ্যাতির সঙ্গেই জুড়েছে বিতর্কও। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি ভালবাসায় চূড়ান্ত সমর্পণের প্রতীক। পারস্পরিক বিশ্বাস ও নির্ভরতা ছাড়া এমনটা করা অসম্ভব। তাঁদের মতে, এই ঘটনা আধুনিক যুগের লাইলা-মজনু বা রোমিও-জুলিয়েটের কাহিনীরই এক নতুন সংস্করণ। কিন্তু অন্যদিকে, সমাজবিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, ভালবাসার সঙ্গে এমন শারীরিক প্রতিকূলতাকে মেলানো অর্থহীন। তাঁদের মতে, এটি খ্যাতির লোভে করা একটি বিপজ্জনক স্টান্ট ছাড়া আর কিছুই নয়। দীর্ঘক্ষণ না ঘুমিয়ে, একটানা দাঁড়িয়ে থাকার ফলে শরীরে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। ভালবাসার নামে এমন স্বাস্থ্যঝুঁকি নেওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করা যায় না বলে মত তাঁদের।
বিতর্ক যাই হোক না কেন, এক্কাচাই ও লাকসানার এই চুম্বন যে ইতিহাসের পাতায় এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।