আজকাল ওয়েব ডেস্ক: ৩৫-এর পর গর্ভধারণকে সাধারণত ‘হাইরিস্ক প্রেগন্যান্সি’ হিসাবে গণ্য করা হয়। এই বয়সের পর থেকে গর্ভধারণের সুযোগ কমতে থাকে। আইভিএফের মতো চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয়। বয়স বাড়লে অ্যাবরশনের চান্সও বেড়ে যায় অনেক গুন। হাইপার টেনশনের মতো একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। নরমাল ডেলিভারি কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। শেষ উপায় সিজার এমনকি সময়ের আগেই নানা জটিলতা তৈরি হওয়ায় ডেলিভারিও করিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পড়াশোনা, কেরিয়ার, পারিপার্শ্বিক চাপ, সব সামলে মা হতে পিছিয়ে যাচ্ছে মেয়েদের মাতৃত্বের বয়স। এখন সন্তান ধারণের গড় বয়স দাঁড়িয়েছে ৩৩-৩৫। কারও ক্ষেত্রে এই বয়স আরও বেশি। অনেকে এখন ৩৫ বছর বয়সের পরও মা হচ্ছেন। ফলে বাড়ছে ঝুঁকিও।
সন্তান আসার জন্য মাসের কোন সময় বা কতদিন অন্তর যৌন মিলন করা উচিত, চিকিৎসকের সঙ্গে সেই বিষয়ে পরামর্শ করা দরকার। কারণ, নিজের ইচ্ছে ও সময় মতো কয়েক মাসের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সম্ভব নয়। তাড়াহুড়ো না করে কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে একমাসে গর্ভধারণের চান্স ৮%। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই এগোতে হবে।
গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই নিজের জীবনযাপনকে পরিবর্তন করে নিতে হবে। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ,
মদ্যপান, ধূমপান সম্পূর্ণ বন্ধ, পিসিওডি, পিসিওএস থাকলে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ওজন। নিয়মিত শরীরচর্চাও ভীষন জরুরি। আর্লি টু বেড অ্যান্ড আর্লি টু রাইজকেই জীবনের মূল মন্ত্র করুন। এই সময় স্ট্রেসকে কোনভাবেই নিজের জীবনে এন্ট্রি দেবেন না। স্ট্রেস গর্ভধারণের অন্যতম বাধা। ৪০-৪২ বছরে মা হতে চাইলে নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি করতে হবে। সন্তানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রি প্রেগন্যান্সি কাউন্সেলিং করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, গর্ভধারণের আগে মানসিকভাবে মা হয়ে ওঠা দরকার। প্রি প্রেগন্যান্সি ডিপ্রেশন থাকলে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন আসা স্বাভাবিক। তবে তা চিকিৎসার মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে ডবল মার্কার, এনটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষা প্রয়োজন। সন্তানের কোনও জিনগত, জন্মগত শারীরিক ত্রুটি আছে কি না জানা দরকার। ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত কি না পরীক্ষা করে জেনে নেওয়া দরকার। মা সম্পূর্ণ সুস্থ কি না তাও দেখে নিতে হবে। হবু মায়ের হার্টের অবস্থা জেনে নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পরামর্শ নিয়ে এগোলে গোটা জার্নিটা মসৃণ ও সমস্যাহীন হবেই। বারবার ডাক্তার পরিবর্তন করবেন না। বাড়ির কাছাকাছি চিকিৎসক বা হাসপাতালে দেখান এবং সমস্ত এমার্জেন্সি ফোন নম্বর কাছে রাখবেন।
স্বামী-স্ত্রীর থ্যালাসেমিয়ার মতো কোনও রোগ রয়েছে কি না, তা জানতে রক্তপরীক্ষা করানোও অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও হার্ট, ফুসফুস, লিভারের চেক-আপ করানো দরকার। ফলিক অ্যাসিড, রক্তাল্পতা থাকলে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।
