আমরা দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ করি, যেগুলো নিয়ে খুব একটা ভাবি না। অথচ সময়ের সঙ্গে এই অভ্যাসগুলিই নীরবে পেটের ক্ষতি করতে পারে। ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার কিংবা নিয়মিত মদ্যপান, এই সব কিছুই পাকস্থলীর আস্তরণে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। গ্যাস্ট্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায় এবং যন্ত্রণাদায়ক আলসারের কারণ হতে পারে। কোন কোন উপাদান অন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর এবং কেন সেগুলি এড়িয়ে চলা জরুরি, তা জানলে হজমশক্তি ভালো রাখা ও দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এড়ানো যায়।

ফ্লোরিডার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কনটেন্ট নির্মাতা ডা. জোসেফ সালহাব, যিনি হজমতন্ত্র, লিভার, অগ্ন্যাশয় ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করেন, সম্প্রতি এমন তিনটি সাধারণ ‘গাট টক্সিন’-এর কথা তুলে ধরেছেন, যেগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। ১৮ ডিসেম্বর ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, কীভাবে এই উপাদানগুলি চুপিসারে পাকস্থলীর ক্ষতি করছে এবং কেন সেগুলি এড়িয়ে চললে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।

ধূমপান ও ভেপিং

ডা. সালহাবের মতে, সিগারেট খাওয়া বা ভেপিং শুধু ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না, পাকস্থলী এবং খাদ্যনালিতেও আঘাত হানে। কারণ প্রতিটি টানের সঙ্গে নেওয়া ধোঁয়ার একটি অংশ এই পথ দিয়ে যায়। তাঁর কথায়, ধোঁয়ার রাসায়নিক উপাদান পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে তীব্র গ্যাস্ট্রাইটিস ও রক্তক্ষরণজনিত আলসার দেখা দেয়। নিকোটিন পাকস্থলীতে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়, ফলে ক্ষত সেরে ওঠে না। পাশাপাশি ধূমপান খাদ্যনালি ও পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়।

ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার

আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেনের মতো কিছু ব্যথানাশক দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে পাকস্থলীর আস্তরণে জ্বালা সৃষ্টি হতে পারে এবং রক্তক্ষরণসহ আলসার দেখা দিতে পারে। ডা. সালহাব জানান, এই ওষুধগুলি স্বল্পমেয়াদি ব্যথা কমানোর জন্য তৈরি, দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য নয়। তাই যতটা সম্ভব কম মাত্রায় এবং অল্প সময়ের জন্যই এগুলি খাওয়া উচিত। বেশি দিন যদি প্রয়োজন হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া জরুরি।

অতিরিক্ত মদ্যপান

প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান শুধু লিভারের ক্ষতি করে না, পাকস্থলীর আস্তরণেও তীব্র প্রদাহ ঘটাতে পারে। ডা. সালহাবের ব্যাখ্যায়, ধূমপানের মতোই অ্যালকোহল পাকস্থলীর জন্য বিষাক্ত হতে পারে। এর ফলে ‘অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রাইটিস’ নামের সমস্যা দেখা দেয় এবং পাকস্থলীতে আলসার হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।