আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে, কিন্তু সোফা ছাড়তে মন চাইছে না। হাতে স্মার্টফোন, চোখে স্ক্রিনের মায়া। বাইরে থেকে বন্ধুদের ডাক বা খোলা হাওয়ার হাতছানি- কোনও কিছুই যেন বিছানার সঙ্গে গভীর প্রেমকে ভাঙতে পারে না। আধুনিক জীবনযাত্রায় এই ঘরকুনো স্বভাব বা আলসেমি বহু মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, এই জড়তা কাটিয়ে বাইরে বেরোনোর ইচ্ছেটা রাতারাতি তৈরি হয় না। এর জন্য প্রয়োজন কয়েকটি ছোট ছোট অভ্যাস তৈরি করা, যা আপনার দৈনন্দিন রুটিনেরই অংশ হয়ে উঠবে।
আলসেমির এই দেওয়াল ভাঙার জন্য রইল পাঁচটি সহজ দৈনন্দিন কাজের সন্ধান।

১। লক্ষ্য হোক একেবারে ছোট
আমরা প্রায়শই কোনও কিছু অর্জনের জন্য বড় লক্ষ্য স্থির করে ফেলি। যেমন, “রোজ এক ঘণ্টা হাঁটব” বা “জিমে যাব”। এই বড় লক্ষ্যই অনেক সময় আলসেমিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তার বদলে শুরু করুন একেবারে ছোট লক্ষ্য দিয়ে। নিজেকে বলুন, “আমি শুধু পাঁচ মিনিটের জন্য বাইরে যাব।” বাড়ির সামনের রাস্তায় বা কাছের পার্কে হেঁটে আসুন। মূল উদ্দেশ্য ব্যায়াম করা নয়, কেবল ঘর থেকে বেরোনোর অভ্যাসটা তৈরি করা। কয়েকদিন পর এই পাঁচ মিনিট নিজে থেকেই দশ মিনিটে বদলে যাবে।

২। কাজের সঙ্গে জুড়ে দিন
উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটতে বেরোনো অনেক সময় একঘেয়ে লাগতে পারে। তাই বাইরে বেরোনোর সঙ্গে একটি ছোট অথচ জরুরি কাজ জুড়ে নিন। যেমন- দুধের প্যাকেট নিয়ে আসা, পাশের দোকান থেকে খবরের কাগজ কেনা বা পোষ্যকে নিয়ে একবার ঘুরে আসা। এই ছোট ‘উদ্দেশ্য’টিই আপনাকে ঘর থেকে বেরনোর জন্য প্রয়োজনীয় উৎসাহ দেবে। কাজটি সম্পন্ন হলে মনে এক ধরনের তৃপ্তিও আসবে, যা আপনাকে পরের দিন বেরোনোর জন্য উৎসাহিত করবে।

৩। পোশাক তৈরি রাখুন
অনেক সময় কী পরে বেরব বা জুতো খুঁজে বের করার মতো ছোটখাটো ঝামেলার কারণেও বাইরে যাওয়ার ইচ্ছেটা মরে যায়। এই বাধা দূর করতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। সকালে বা আগের দিন রাতেই ঠিক করে নিন বাইরে যাওয়ার সময় কোন পোশাক ও জুতো পরবেন। সেগুলিকে হাতের কাছে গুছিয়ে রাখুন। এর ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্লান্তি কমবে এবং আলসেমিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগও থাকবে না।

৪। একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে ফেলুন
“পরে যাব” বা “বিকেলের দিকে বেরোব”- এই ধরনের অনির্দিষ্ট লক্ষ্য রাখলে তা প্রায়শই বাস্তবায়িত হয় না। তাই দিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। সেটা সকালে ঘুম থেকে উঠে, দুপুরে খাওয়ার পর বা বিকেলে চায়ের আগে যেকোনও সময়ই হতে পারে। মোবাইল ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। যখন বিষয়টিকে আপনার দৈনন্দিন রুটিনের অংশ হিসেবে দেখবেন, তখন আলসেমি কাটিয়ে ওঠা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই

৫। আনন্দের উপকরণ সঙ্গে রাখুন
বাইরে বেরোনোর অভ্যাসটি যেন একঘেয়েমি মনে না হয়। ঠিক করে নিন, আপনার পছন্দের গানের প্লে-লিস্ট বা কোনও আকর্ষণীয় পডকাস্ট আপনি কেবল বাইরে হাঁটার সময়েই শুনবেন। এর ফলে আপনার মস্তিষ্ক বাইরে বেরোনোর সঙ্গে একটি আনন্দের অনুভূতিকে জুড়ে নেবে। তখন হাঁটতে যাওয়াটা আর কাজ বলে মনে হবে না, বরং তা দিনের অন্যতম প্রিয় সময় হয়ে উঠবে।

মনে রাখবেন, কোনও অভ্যাসই একদিনে বদলায় না। প্রয়োজন শুধু ধৈর্য এবং প্রথম পদক্ষেপটি নেওয়ার মানসিকতা। একটু তাজা বাতাস, প্রকৃতির ছোঁয়া আর হালকা শারীরিক পরিশ্রম আপনার শরীর ও মন উভয়কেই চাঙ্গা করে তুলতে পারে।