আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহর জুড়ে উৎসবের আলো, ভেসে আসছে ঢাকের পরিচিত বোল। নতুন জামার গন্ধ আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার আবহে মনটা খুশিতে ভরপুর। কিন্তু এই আনন্দের মাঝেই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে তাঁদের, যাঁদের প্রিয়জন কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য থাকেন শহরের বাইরে। পুজোর ছুটিতে যাঁর হাত ধরে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরার কথা ছিল, তিনি রয়ে গিয়েছেন ভিন্ রাজ্যে বা বিদেশে। ভিডিও কলেই সারা হয় পুজোর শুভেচ্ছা বিনিময়, কিন্তু মন কি আর তাতে ভরে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, লং ডিস্ট্যান্স সম্পর্কে উৎসবের দিনগুলোতেই সবচেয়ে বেশি করে একাকিত্ব গ্রাস করে। সঙ্গীর অভাব এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। তবে মন খারাপ করে বসে না থেকে প্রযুক্তির হাত ধরেই এই দূরত্বকে কিছুটা কমিয়ে আনা যায়। কীভাবে? রইল কিছু সুলুকসন্ধান।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই
১। ভার্চুয়াল প্যান্ডেল হপিং: আজকাল স্মার্টফোনের দৌলতে গোটা বিশ্বই হাতের মুঠোয়। তাই আপনি যখন ঠাকুর দেখতে বেরোবেন, সঙ্গীকে ভিডিও কলে সঙ্গে রাখুন। লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে তাঁকে দেখান আপনার এলাকার সেরা ঠাকুর, মণ্ডপের আলোকসজ্জা। অষ্টমীর অঞ্জলি হোক বা সন্ধিপুজোর আরতি, প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁকেও সামিল করে নিন আপনার উদযাপনে। এতে তিনি শুধু আপনার আনন্দটুকুই দেখবেন না, নিজেকেও উৎসবের অংশ বলে মনে করবেন।
২। সাজপোশাকে থাকুক মিল: পুজো মানেই নতুন পোশাক। অষ্টমীর বা নবমীর জন্য দু’জনে আলোচনা করে একটি নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরতে পারেন। একসঙ্গে নতুন পোশাকে ছবি তুলে একে অপরকে পাঠান বা ভিডিও কলে কথা বলুন। এতে শারীরিকভাবে দূরে থাকলেও মানসিকভাবে একাত্ম বোধ করবেন। মনে হবে, যেন একসঙ্গেই সেজে উঠেছেন পুজোর আনন্দে।
৩। পেটপুজো হোক একসঙ্গেই: পুজোর ভোগ হোক বা বিরিয়ানি, খাওয়াদাওয়া ছাড়া বাঙালির উৎসব অসম্পূর্ণ। আপনারা একে অপরের ঠিকানায় অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে পছন্দের খাবার পাঠিয়ে দিতে পারেন। তারপর ভিডিও কলে একসঙ্গে বসে চলুক খাওয়াদাওয়া আর গল্প। এতে দূরে থেকেও একসঙ্গে খাওয়ার অনুভূতিটা পাওয়া যাবে।
৪। উপহারে থাকুক চমক: আগে থেকে পরিকল্পনা করে সঙ্গীর ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন পুজোর উপহার। সেটা হতে পারে তাঁর পছন্দের কোনও বই, পোশাক বা অন্য কিছু। উৎসবের দিনে অপ্রত্যাশিত উপহার সম্পর্ককে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই ছোট ছোট বিষয়গুলোই বুঝিয়ে দেয়, দূরে থেকেও আপনি তাঁর কথা কতটা ভাবেন।
৫। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা: এই পুজোয় একসঙ্গে থাকতে না পারার আক্ষেপ না করে, আগামী পুজোয় একসঙ্গে কী কী করবেন, তার পরিকল্পনা করুন। কোথায় ঘুরতে যাবেন, কোন কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন- এই আলোচনাগুলো মনকে সাময়িক দুঃখ ভুলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী করে তুলবে।
মনে রাখবেন, দূরত্ব সাময়িক। প্রযুক্তির এই যুগে ভালবাসার উদ্‌যাপন ভৌগোলিক সীমারেখা মানে না। অভিমান বা মন খারাপ না করে একে অপরের পাশে থাকুন। এই পুজোর মুহূর্তগুলোই আগামী দিনে আপনাদের সম্পর্কের ভিত আরও মজবুত করবে।