আজকাল ওয়েব ডেস্ক: গরমে ঘাম কমবেশি সকলেরই হয়ে থাকে। কিন্তু প্রচণ্ড বেশি ঘাম হওয়া কি স্বাভাবিক লক্ষণ?

এই ঘামের কারণে ঘন ঘন ডিহাইড্রেশন হয়। জামাকাপড় ভিজে থাকে সবসময়। অথচ একই গরমে অন্যদের ততটা ঘাম হয় না। ঘামের এই সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় হাইপারহাইড্রোসিস বলে।এই সমস্যার লক্ষণও একটু আলাদা।

ত্বক পুরোপুরি ভিজে থাকে।কপাল, মুখ, হাতের কনুই থেকে জলের মতো ঘাম পড়তে থাকে।রাস্তায় চলাফেরা করতেও অস্বস্তিবোধ করেন অনেকে।

প্রায়ই ঘামে জামাকাপড় ভিজে যায় ও চুলকানি ও জ্বালাও হতে পারে। অতিরিক্ত ঘামে গায়ে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ হয়।

কপালে, থুতনিতে, বগল, পায়ের পাতা, হাতের তালু, গোপনাঙ্গে ও কোমরে অতিরিক্ত ঘাম হয়।

মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজ আসার সঙ্গে শরীরে কিছু মানসিক বা শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। এর মধ্যে একটি প্রধান লক্ষণ কিন্তু অত‌্যধিক ঘাম হওয়া বা গরম লাগা।সঙ্গে মুড পরিবর্তন, হঠাৎ হঠাৎ রেগে যাওয়া, খিটমিট বা বিরক্ত হওয়া, দুর্বলতা, ডিপ্রেশন, চামড়া কুঁচকে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। তাই বয়সকালে ঘামের পরিমাণ বাড়লে সাবধান হতে হবে।

মানসিক বা শারীরিক স্ট্রেস বেড়ে গেলে বেশি ঘাম হতে পারে। সারাদিন কাজের চাপ থেকে প্রচুর স্ট্রেস হয়।যার থেকে ঘাম হতে পারে।

অতিমাত্রায় প্রোটিন রয়েছে এমন খাবার থেকেও ঘামের সমস্যা হয়।ধূমপান থেকেও বাড়তে পারে ঘামের সমস্যা। ধূমপানের ফলে নিকোটিন শরীরের অ্যাসিটাইলকোলিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।এর ফলে শরীরের তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন ও ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়।এর থেকে হতে পারে ঘাম।

শারীরিক সমস্যা যেমন ডায়াবিটিস ও লো ব্লাড প্রেশার হলেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও বাইকার্বোনেট লবণ। শরীরে এই লবণগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখতে নুন-চিনির শরবত খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনও সঙ্গে রাখা ভালো।

প্যানিক কমানোর জন্য নিয়মিত শ্বাসের ব্যায়াম ও ধ্যান করা উচিত। সঙ্গে দইয়ের ঘোল, ফলের শরবত ও ডাবের জল শরীরে জলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

হাইপারহাইড্রোসিসের মূল কারণ শরীরে ভিটামিন বি-১২-এর অভাব।এই ভিটামিনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে মাছ, দুধ, ডিম ইত্যাদি খেতে পারেন।

অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণে শারীরিক সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।রোজকার কাজকর্ম ব্যাহত হলে সাবধান হন।বেশি ঘাম হয় বলে মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারেন না অনেকে। সেক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান খুঁজে না পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।