ডায়াবেটিস থাকুক বা না থাকুক, রাতের খাবার রক্তে শর্করার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। কারণ রাতে শরীরের নড়াচড়া কম হয়, বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এই সময় ভুল খাবার খেলে রক্তে সুগার হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, রাতের খাবারই ঠিক করে দেয় আপনার পরের দিনের সুগার রিপোর্ট। তবে একটু সচেতন হলেই বড় সমস্যা এড়ানো সম্ভব। ডায়াবেটোলজিস্টদের মতে, কিছু খাবার আছে যেগুলো রাতে খাওয়া হলে ব্লাড সুগার দ্রুত স্পাইক করে। তাহলে ডায়াবেটিসে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন জেনে নিন- 

১. সাদা ভাত ও ময়দা দিয়ে তৈরি খাবারঃ সাদা ভাত, নান, পাস্তা বা ময়দার রুটি- এগুলো খুব দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হয়। রাতে এগুলো খেলে শরীর সেই শর্করা খরচ করতে পারে না, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস থাকলে এই খাবারগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
২. আলু ও ভাজা খাবারঃ আলু, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চপ, পকোড়া-এই সব খাবারে কার্বোহাইড্রেট ও তেল দুটোই বেশি থাকে। এর ফলে ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
৩. চিনি দেওয়া সস ও গ্রেভিঃ টমেটো কেচাপ, চিলি সস, রেডি-মেড গ্রেভি বা ড্রেসিংয়ে অনেক সময় শর্করা থাকে। অল্প পরিমাণ হলেও রাতে এগুলো রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪. সাদা পাউরুটি ও বেকারি খাবারঃ পাউরুটি, বান, কেক বা বিস্কুটে ফাইবার প্রায় নেই বললেই চলে। তাই এগুলো খুব দ্রুত রক্তে চিনিতে রূপান্তরিত হয় এবং হঠাৎ সুগার স্পাইক ঘটায়।
৫. মিষ্টি ও ডেজার্টঃ অনেকেরই রাতে খাওয়ার পর মিষ্টি, আইসক্রিম বা মিষ্টি দই খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু এগুলো রাতের জন্য বেশ বিপজ্জনক। এর ফলে পরের দিন সকালে ফাস্টিং সুগারও বেড়ে যেতে পারে।
৬. প্যাকেটজাত বা ক্যানড খাবারঃ ক্যানড স্যুপ, প্যাকেটজাত নুডলস বা রেডি-টু-ইট খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও প্রিজারভেটিভ থাকে। এগুলো দীর্ঘমেয়াদে ইনসুলিনের কাজ কমিয়ে দেয়।
৭. মিষ্টি গোটা শস্যঃ অনেকে ভাবেন গোটা শস্য হালকা খাবার। কিন্তু বেশিরভাগ প্যাকেটজাত শস্যেও চিনি অনেক বেশি থাকে। রাতে খেলে এটি রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।

তাহলে রাতে কী খাবেন? রাতের খাবার হওয়া উচিত হালকা ও সহজপাচ্য। ডাল, সবজি, স্যালাড, দই, পনির, ডিম বা গ্রিল করা মাছ-এই ধরনের খাবার সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।