ওজন কমানো মোটেই সহজ নয়। অনেকের কাছেই বেশ চ্যালেঞ্জিং বিষয় বাড়তি মেদ ঝরানো। মেদ ঝরাতে অনেকেই বেশ কসরত করেন। কেউ দৌড়ান ট্রেডমিলে, কেউ বা ক্যালোরি মেপে মুখে তুলছেন খাবার। আবার সময়ের অভাবে ‘শর্টকাট’ পন্থাও নিচ্ছেন অনেকেই। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই ওজন কমানোর জন্য জিম, পুষ্টিবিদ বা ইউটিউব ভিডিওর উপর নির্ভর করেন। কিন্তু কখনও চ্যাট জিপিটির সাহায্যে মেদ ঝরাতে শুনেছেন? তাও আবার এক কেজি, দু কেজি নয়। ছয় মাসে এক্কেবারে ২৬ কেজি ওজন কমিয়েছেন এক যুবক। নেটপাড়ায় তুমুল চর্চা চলেছে তাঁর এই ওজন কমানোর প্রক্রিয়া নিয়ে।
নিউজিল্যান্ডের এক ইউটিউবার বেছে নিয়েছিলেন একেবারে অন্য পথ-চ্যাটজিপিটি বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তিনি এই এআই‑কে নিজের জীবনের কোচ বানিয়ে ফেলেন। যার নাম দেন 'আর্থার'। আর 'আর্থার'-এর সহায়তায় মাত্র ছয় মাসে তিনি কমিয়ে ফেলেন প্রায় ২৭ কেজি ওজন। তবে তাঁর বক্তব্য, এই শারীরিক বদলের চেয়েও বড় ছিল মানসিক রূপান্তর। আসলে তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।
এই তরুণ জানান, আগে তাঁর জীবন ছিল বিশৃঙ্খল। ফাস্টফুড, অ্যালকোহল, অনিয়মিত ঘুম আর দুশ্চিন্তায় ঘেরা ছিল তাঁর জীবন। এক সময়ে তিনি বুঝতে পারেন যে তাঁর এই জীবনযাপনে পরিবর্তন জরুরি। তখনই তিনি চ্যাটজিপিটিকে নিজের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুনঃ এক কাপ চা খেয়েই কমবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি! জানেন কোন চা কীভাবে খেলে দূরে থাকবে হৃদরোগ?
চ্যাজিপিটি তরুণকে একটি ব্যালেন্সড ডায়েট প্ল্যান, সপ্তাহভিত্তিক ব্যায়ামের রুটিন, এমনকী তাঁর ইউটিউব কনটেন্ট তৈরির সময়সূচিও তৈরি করে দেন। এই 'এআই বন্ধু' তাঁর জন্য এমন এক হাঁটা, স্ট্রেচিং, ওজন তোলা-সবকিছু মিলিয়ে এমন এক রুটিন নির্ধারণ করে যা কঠিন নয়, কিন্তু ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে গেলে কার্যকর।
ছয় মাসে চ্যাজিপিটির রুটিন মেনে তরুণের শরীর যেমন পাল্টে গেছে, তেমনি বদলেছে মনও। আগের মতো আলসেমি, হতাশা, বা অস্থিরতা আর তাঁর নেই। তরুণের কথায়, “আর্থার আমাকে পারফেক্ট বানায়নি, কিন্তু ধারাবাহিকতা শিখিয়েছে। আমাকে প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে চলতে শিখিয়েছে। সেটাই আসল পরিবর্তন।”
প্রসঙ্গত, চ্যাটজিপিটির পরামর্শ বেশ কিছু পরামর্শ মেনে চলতেন তরুণ। যেমন শুধু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াই নয়, কী পরিমাণে এবং কীভাবে খাচ্ছেন তাও খেয়াল রেখেছেন। সঙ্গে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করেছেন।

যতই ব্যস্ততা থাকুক মেদ ঝরাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে শরীরচর্চার। সপ্তাহে ৪-৫ দিন অন্তত ৩০ মিনিট একসারসাইজ করতে হবে। যেভাবেই হোক শরীরের নড়াচড়া প্রয়োজন। নিদেনপক্ষে প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি করেছেন যুবক।
দ্রুত ওজন কমাতে উপোস করতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে। কিছুদিনের মধ্যে ফের ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সঙ্গে শরীরে দেখা দিতে পারে আরও অনেক সমস্যা। বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকলে শরীরে ফ্যাট জমতে শুরু করে। নিউজিল্যান্ডের তরুণও এই নিয়ম মেনে চলেন। সঙ্গে তিনি জোর দেন পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপমুক্ত থাকার উপর। কারণ বেশি দুশ্চিন্তা করলে ওজন তো কমবেই না, উল্টে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটবে। সঙ্গে রোজ ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।
