আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুনিয়াতে টিকে থাকতে হলে টাকা চাই। শুধু রোজকার জীবন চালানোই নয়, চাই সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বিলাসিতাও। যার জন্য সকলেই বিভিন্নভাবে উপার্জনের পথ বেছে নেন। আবার দেশে-বিদেশে এমন অনেক পেশা বা কাজ রয়েছে যেগুলো যে পেশা হতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না। এমনই এক বিচিত্র পেশা হল জড়িয়ে ধরার পেশা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। আলিঙ্গন বা জড়িয়ে ধরাও একটি পেশা। বিশ্ব জুড়ে এই পেশায় কাজ করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন বহু মানুষ। 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে আলিঙ্গন করলে মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। নিমেষে জীবনের হাজার সমস্যার সমাধান দিতে পারে 'জাদু কি ছাপ্পি'। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শরীর ভাল রাখতেও আলিঙ্গনের ভূমিকা রয়েছে। আর এই কাজটিকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন অনেকে। যাদের বলা হয় ক্যাডলিস্ট। আধুনিক কর্মব্যস্ততার জীবনে কমবয়সিদের মধ্যেও মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে। তাই বিশ্ব জুড়ে ক্রমশ বেড়ে চলেছে এই পেশার চাহিদা। 

ক্যাডলিস্টরা কোনও গ্রাহকের সঙ্গে ১ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় কাটান। শুধু গ্রাহকদের জড়িয়ে ধরাই তাঁদের কাজ। কেউ নিজে একা আবার কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েও অনেকে এই পেশায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে ক্যাডলিস্টরা গ্রাহকদের থেকে তাঁদের জীবনের বিভিন্ন বিষয় জানতে চান। তাঁদের শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। এরপরই আসে আলিঙ্গনের ধাপ। শান্ত মিউজিক দিয়ে শুরু হয় সেশন। প্রথম ক্যাডলিস্টরা গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেন, এরপর তাঁদের চুলে বিলি কেটে দেন এবং ডাবল বেডে বিভিন্ন অবস্থানে জড়িয়ে ধরেন। প্রায় ১ ঘণ্টা গ্রাহককে জড়িয়ে থাকেন এই পেশার মানুষেরা। 

হতাশা-অবসাদ মনকে গ্রাস করলে অনেকেই এই পথের আশ্রয় নেন। কিশোর-কিশোরী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সকলের জন্য থাকে আলিঙ্গনের থেরাপি। এই পেশায় প্রতি ঘণ্টার সেশনের জন্য ৪-৬ হাজার টাকা আয় হয়। তিন ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজারের বেশি আয়ের সুযোগ থাকে। 

মূলত এটি একটি স্পর্শ থেরাপি যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে 'জাদু কি ঝাপ্পি' দেওয়া হয়। কঠিন রোগে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তিকেও টাকার বিনিময়ে ক্যাডলিস্টরা জড়িয়ে ধরতে দ্বিধাবোধ করেন না। তবে এতে প্রেমিক-প্রেমিকার আলিঙ্গনের মতো কোনও ব্যপার নেই। থাকে না যৌনতার কোনও গন্ধও। ক্যাডলিস্টরা শুধু গ্রাহকদের মানসিকভাবে পাশে থাকার জন্যই আলিঙ্গন করেন।