আজকাল ওয়েব ডেস্কঃ মানসিক চাপ যেমন জীবনের শান্তিকে বিঘ্নিত করে তেমনই নানা ধরণের শারীরিক জটিলতাও তৈরি করে। তার থেকে আসে রক্তচাপ। এই রক্তচাপ ও মানসিক চাপ মিলিয়ে এই চূড়ান্ত ব্যস্ততার সময়ে কমবয়ীদের মধ্যেই বাড়ছে ব্রেন হ্যামারেজের ঘটনা। কারণ জেনে নিন আসল কিছু তথ্য।
আজকের দিনে ডায়াবেটিস, ওবেসিটিতে প্রায় অধিকাংশই আক্রান্ত, সঙ্গে ধূমপান, মদ্যপান, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা তো আছেই। একসঙ্গে এরা মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তক্ষরণের পরিস্থিতি তৈরি করে। ব্রেন হেমারেজ এক ধরণের ব্রেন স্ট্রোক। মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছলে ব্রেন ফাংশন ঠিক রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। রক্তনালির মাধ্যমে অক্সিজেন ব্রেনে সরবরাহ হয়। যখন ব্রেনের মধ্যে রক্তনালি লিক করে বা ফেটে যায় তখন মস্তিষ্ক ও খুলির মধ্যে যে স্থান থাকে সেখানে রক্ত জমে থাকে। যা ব্রেনে খুব চাপ তৈরি করে এবং অক্সিজেন পৌঁছতে বাধা দেয়। স্নায়ুকোষের মধ্যে পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান বন্ধ হয়ে যায়। যা প্রাণঘাতী হতে পারে অথবা শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতাও তৈরি করে। ধমনি বেলুনের মতো ফুলে ওঠা এবং ফেটে যাওয়া, রক্তে প্লেটলেটের অভাব, ব্রেন টিউমার, সংক্রামক অসুখ, লিভার সিরোসিস ও কোনও আঘাতজনিত কারণ থেকেও হেমারেজের প্রকৃতি তৈরি হতে পারে।
চিকিৎসা পরিভাষায় স্ট্রোক হলে ডাক্তাররা প্রথমেই কিছু জিনিসকে পর্যবেক্ষণ করতে বলেন। এই পর্যায়গুলো সঠিকভাবে লক্ষ্য করে সত্বর চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পারলে রোগীর প্রান ফিরে আসতে পারে। তাকে বলে BEFAST অর্থাৎ
B ব্যালেন্স - হঠাৎ ভারসাম্য হারানো।
E চোখ - চোখ বা হঠাৎ চোখ ট্যারা হয়ে যাওয়া, একটা জিনিসকে দুটো দেখা, দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া।
F মুখ - একদিকের মুখ বেঁকে যাওয়া।
A হাত- হঠাৎ একদিকের হাত-পা পড়ে যাওয়া বা অসাড় হয়ে যাওয়া।
S স্বর - হঠাৎ কথার স্বর জড়িয়ে যাওয়া।
T সময়- এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যত তাড়াতাড়ি রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া যাবে তত দ্রুত রোগ নির্ণয় হবে ও রোগী দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন।
বয়স্কদের সঙ্গে সঙ্গে এখন মাত্র ২০-২৪ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যেও বেড়েছে ব্রেন হেমারেজের ঘটনা। মানসিক চাপ একটি কারণ মাত্র, রয়েছে আরও অন্য কারণও। এমনকী, বিভিন্ন ওষুধের কোর্স শেষ না হলেও তা থেকেও হতে পারে মস্তিষ্কের মধ্যে রক্তক্ষরণ। তাই সাবধান। রোজকার জীবনযাপনে কোনও রকম ত্রুটিবিচ্যুতি কিন্তু ডেকে আনতে পারে এই জটিল অসুখ।
চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে প্রথমে। প্রেশার হাই থাকলে মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা দূরে রাখতে হয়। প্রেশারের সঙ্গে খেয়াল রাখুন সুগারের মাত্রাকেও। সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক রয়েছে কি না সেটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জ্বর হলে চিকিৎসাও করা দরকার। জ্বর না কমলে ব্রেনে বেশি প্রভাব পড়ে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা উচিত। সব সময় চিন্তামুক্ত, সুস্থ জীবন যাপন করুন।ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।, নিয়মিত শরীর চর্চা, ওষুধ খাওয়া, ব্লাড সুগার ও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষন জরুরী।
