শীতকাল নানা সমস্যাকে সঙ্গে নিয়ে আসে। এই সময় সর্দি–জ্বর, কাশি থেকে শুরু করে নানা শারীরিক অসুস্থতা দ্রুত বাড়তে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে যায়। তবে প্রতিদিন অল্প পরিমাণ আদা শরীরকে বহু রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয়। আয়ুর্বেদে আদাকে ‘বিশ্বভেষজ’ নামে ডাকা হয়। আয়ুর্বেদ মতে, নিয়মিত সামান্য আদা খেলে শরীর নানা ধরনের অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা পায়। বিশেষ করে শীতে হওয়া বেশিরভাগ রোগ প্রতিরোধে এটি খুবই কার্যকর। এখন প্রশ্ন, আদা কীভাবে স্বাস্থ্য উপকার করে? শীতে কেন আদা খাওয়া জরুরি? কোন কোন রোগে আদা উপকারী? জেনে নেওয়া যাক।
শীতে আদা কীভাবে উপকার করে?
আয়ুর্বেদে আদাকে ‘বিশ্বভেষজ’, অর্থাৎ বিশ্বের ওষুধ বলা হয়েছে। ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে ইমিউনিটি বাড়ানো, আদার উপকারিতা অসংখ্য। আদাকে বিশেষ করে তোলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ—
জিঞ্জারল: যা তৎক্ষণাৎ ব্যথা ও প্রদাহ কমায়।
শোগল: শুকনো আদায় পাওয়া যায়, যা শরীরকে ভিতর থেকে উষ্ণ রাখে।
জিঞ্জারোন: যা হজমশক্তি উন্নত করে।
এছাড়াও আদায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা সর্দি–কাশি ও সংক্রমণজনিত অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে।
শীতে আদা খাওয়ার প্রধান উপকারিতা
ইমিউনিটি বাড়ায়
শ্বাসনালী পরিষ্কার করে, কফ ও হুইজিং কমায়
রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে হাত–পা গরম রাখে
বাত এবং গাঁটের ব্যথায় প্রাকৃতিক পেনকিলারের মতো কাজ করে
ডায়াবেটিস এবং খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
হজমের সমস্যা, গ্যাস এবং বমিভাব দূর করে
গলা ব্যথা এবং কাশিতে দ্রুত আরাম দেয়
শীতে আদা কীভাবে খাবেন
সকালে খালি পেটে এক থেকে দু’গ্রাম কাঁচা আদা ও এক চিমটি বিট নুন খান। এতে মেটাবলিজম সারাদিন ভাল থাকে।
আদা–তুলসি–গোল মরিচের কাথ সর্দি–কাশিতে দারুণ উপকারী
সারাদিন আদা দেওয়া গরম জল পান করলে শরীর গরম এবং হাইড্রেটেড থাকে
রাতে শুকনো আদা মেশানো গরম দুধ গাঁটের ব্যথা এবং ঠান্ডায় আরাম দেয়
প্রতিদিনের রান্নায় সামান্য কুঁচোনো আদা হজমে সহায়তা করে
আদা যদিও শীতের সুপারস্টার। তবু কিছু ক্ষেত্রে সাবধানে খেতে হয়।
যাদের শরীরে পিত্ত বেশি, তারা অল্প পরিমাণে আদা খাবেন
গর্ভবতী নারী
পাইলসের রোগী
রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান এমন ব্যক্তিদের
আদা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
