আমাদের হাতের কাছে এমন অনেক খাবার রয়েছে যা শরীর-স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। তেমনই একটি সুপারফুড হল অ্যাভোক্যাডো। উৎপত্তিগতভাবে অ্যাভোক্যাডো মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার একটি ফল। তবে এখন আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফলের মধ্যে ফ্যাট জাতীয় উপাদান সচরাচর পাওয়া যায় না। কিন্তু অ্যাভোক্যাডোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। তাছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর অ্যাভোক্যাডো।
স্বাস্থ্যগত গুণের জন্য বর্তমানে অ্যাভোক্যাডো বাঙালির বাড়ির ডায়েটেও দেখা যায়। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকার কারণে অ্যাভোক্যাডো শুধু হৃদরোগই প্রতিরোধ করে না, কিন্তু এটি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্য অন্যতম লিভার। এই অঙ্গটি দেহ থেকে টক্সিন বার করে দেওয়া থেকে শুরু করে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক তৈরি সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায়। যকৃতের স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে ফ্যাটি লিভার থেকে শুরু করে লিভার ফাইব্রোসিস সহ একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে বৈকি। জাপানি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অ্যাভোক্যাডোতে এমন বিশেষ যৌগ রয়েছে যা লিভারের ক্ষতি আটকায়, বিশেষ করে গ্যালাকটোসামিনের মতো বিষাক্ত পদার্থ থেকে রক্ষা করে। চেনা পরিচিত তরমুজ, পেঁপে বা কলার মতো প্রায় ২১টি ফলের তুলনায় অ্যাভোক্যাডো সবচেয়ে শক্তিশালী লিভার-রক্ষাকারী প্রভাব রয়েছে।
অ্যাভোগাডোতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লিভারকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। শুধু তাই নয়, এই অঙ্গ থেকে ফ্যাটের আস্তরণ মুছে ফেলার কাজেও বিশেষ ভূমিকা নেয় অ্যাভোকাডো। তাই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুক্তভোগীরা ডায়েটে এই ফল রাখতে পারেন।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে অ্যাভোক্যাডো। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে অ্যাভোক্যাডো বেশ উপযোগী। গবেষণা বলছে, সপ্তাহে দু'টি করে অ্যাভোক্যাডো খেলে করোনারি হার্ট ডিজিজের আশঙ্কা কমে, সঙ্গে অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন নিরাময় করতেও অ্যাভোকাডোর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া অ্যাভোগাডোর মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
অ্যাভোকাডোতে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। ম্যাগনেশিয়াম অনিদ্রা দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে।
অ্যাভোকাডোতে থাকে লুটেইন, আলফা ক্যারোটিন ও বিটা ক্যারোটিন। যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য এই উপাদানগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষত বার্ধক্যজনিত দৃষ্টি শক্তি হ্রাস রোধ করতে ক্যারোটিনয়েড খুবই উপযোগী।তাই চোখ ভাল রাখতে অ্যাভোক্যাডো খেলে উপকার পাবেন।
ত্বক ও চুলের জন্যও অ্যাভোক্যাডো অত্যন্ত উপকারী। এই ফলের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে এবং ভিতর থেকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। নিয়মিত অ্যাভোক্যাডো খেলে চুলের স্বাস্থ্যও ঠিক থাকে।
