আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুম্বইয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় ক্যাফেতে, ৪০ বছর বয়সী ব্যবসায়ী রিয়া এবং ২৯ বছর বয়সী তরুণ পেশাদার অঙ্কিতকে প্রায়শই শান্ত কফি ডেট উপভোগ করতে দেখা যায়। তাদের বয়সের স্পষ্ট ব্যবধান আশেপাশের সকলকে অবাক করে দেয়। তবুও এই যুগল একে অপরের সান্নিধ্যে পুরোপুরি সন্তুষ্ট বলে মনে হয়। রিয়া খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেন, “আমি অঙ্কিতের এনার্জি এবং ইতিবাচকতা পছন্দ করি।” অন্যদিকে, অঙ্কিত রিয়ার আত্মনির্ভরশীলতা এবং জীবনের অভিজ্ঞতার প্রশংসা করেন।

এক সময় বিরল বলে মনে করা হতো এমন সম্পর্ককে। কিন্তু এখন শহরাঞ্চলে বিষয়টি ক্রমশ সাধারণ হয়ে উঠছে। প্রায়শই যে প্রশ্নটি ওঠে তা হল, বয়স্ক নারীদের কম বয়সী পুরুষদের প্রতি আকর্ষণ কী? এটা কি কেবল শারীরিক আকর্ষণ?

মিডিয়াম ম্যাগাজিনে লেখার সময় সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে জনসাধারণ প্রায়শই ভেবে নেন এই ধরনের সম্পর্কে প্রাধান্য পায় মূলত শারীরিক চাহিদাই। যদিও শারীরিক আকর্ষণ একটি ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে যখন বয়সের পার্থক্য উল্লেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি খুবই সামান্য কারণ। অল্প বয়স্ক পুরুষরা সম্পর্কের মধ্যে প্রাণশক্তি, আবেগ এবং সতেজতা নিয়ে আসে। এমন গুণাবলী যা কখনও কখনও বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে অনুপস্থিত থাকতে পারে।

আরও পড়ুন: সকাল না রাত, পড়াশোনার জন্য সেরা সময় কোনটি, বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন

সাধারণত, যখন মহিলারা কম বয়সী পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কথা বলেন, তখন তারা কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী কাউকে প্রাধান্য দেন। প্রাণশক্তি, ইতিবাচকতা এবং আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রায়শই মূল আকর্ষণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। বয়স্ক মহিলারা কেন কম বয়সী সঙ্গী বেছে নিতে পারেন তার বেশ কয়েকটি কারণ বিশেষজ্ঞরা বর্ণনা করেন-

শারীরিক আকর্ষণ: ফিটনেস এবং প্রাণশক্তি তালিকার শীর্ষে। মহিলারা প্রায়শই তাদের সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় তরুণ পুরুষদের বেশি সক্রিয়, সুঠাম এবং শারীরিকভাবে আকর্ষণীয় বলে মনে করেন।

স্বাস্থ্যবিধি: অল্পবয়সী পুরুষরা নিজের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। প্রতিদিন স্নান করা, পরিষ্কার পোশাক এবং ডিওডোরেন্টের ছোঁয়া ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু এই ধরনের বিবরণ তাদের আকর্ষণ বাড়ায়। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বয়স্ক পুরুষরা প্রায়শই সেই ‘সতেজতা’ হারিয়ে ফেলেন যা মহিলারা স্বাভাবিকভাবেই উপভোগ করেন।

আবেগের বোঝা কম: অল্পবয়সী পুরুষদের মানসিকভাবে মুক্ত হিসেবে দেখা হয়। জীবনের চাপ কম থাকায়, বয়স্ক পুরুষদের তুলনায় তারা কম খিটখিটে হন। বয়স্করা অনেকদিন অতীতের অভিজ্ঞতার বোঝা বহন করে হয়ে যেতে পারেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।

কম পারিবারিক জটিলতা: অনেক বয়স্ক পুরুষের প্রাক্তন সঙ্গী, সন্তান বা পারিবারিক দায়িত্ব থাকতে পারে। তুলনায় কমবয়সী সঙ্গীদের সেই সংক্রান্ত জটিলতা কম।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: যৌবনের সঙ্গে প্রায়শই উৎসাহ এবং সাহসিকতার মনোভাব থাকে। এই ইতিবাচকতা সম্পর্কগুলিকে প্রাণবন্ত রাখে।

ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা: পরিণত মহিলারা তাদের স্বায়ত্তশাসনকে মূল্য দেন। অল্পবয়সী পুরুষরা সাধারণত কম নিয়ন্ত্রণকারী হন এবং তাদের সঙ্গীর কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেন।

পরিবার শুরু করার চাপ কম: অল্পবয়সী পুরুষরা প্রায়শই জীবন অন্বেষণ করে। সন্তান বা পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে কম প্রত্যাশা থাকায়, মহিলারা ব্যক্তিগত এবং পেশাদার লক্ষ্যগুলিতে মনোনিবেশ করার জন্য জায়গা খুঁজে পান।

কেরিয়ার সাপোর্ট: প্রতিযোগিতা করার পরিবর্তে, তরুণ পুরুষরা মহিলাদের কেরিয়ারকে উৎসাহিত এবং সমর্থন করার প্রবণতা রাখে। যা স্বাধীন, কেরিয়ার-চালিত মহিলাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

স্বাস্থ্য এবং প্রাণশক্তি: ফিটনেস, স্ট্যামিনা এবং একটি সক্রিয় জীবনধারা তরুণ পুরুষদের আকর্ষণীয় এবং মজাদার রাখে। সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রাণশক্তি যোগ করে।

নিয়ন্ত্রণহীন মনোভাব: ঐতিহ্যবাহী প্রত্যাশার তুলনায় অল্পবয়সী পুরুষরা সম্পর্কের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে কম আগ্রহী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেন যে এই গুণাবলী সম্মিলিতভাবে ব্যাখ্যা করে যে কেন অনেক বয়স্ক মহিলারা বয়সে ছোট পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জন্য ক্রমশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাদের জন্য, এটি স্টেরিওটাইপ বা ক্ষণস্থায়ী আকর্ষণ নয়, বরং প্রাণশক্তি, স্বাধীনতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, যা একটি সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখে।