আজকাল ওয়েবডেস্ক: সন্দেশখালি থানার পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এবার বড়সড় পদক্ষেপ। খেলনা নোট দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তি। অভিযুক্তের নাম শুভাশিস আচার্য। অবশেষে ৩ জন মহিলা সহ তাঁকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত বা দলের পান্ডা এখনও অধরা বলেই জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রে জানা গিয়েছে মূল অভিযুক্তের নাম অভিষেক তিওয়ারি। তাঁর সহকর্মী তিস্তা সেন ওরফে মুনিয়া, যাদবপুরের বাসিন্দা।
খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, খেলনা নোট নিয়ে এই ধরনের জালিয়াতির চক্র চালাতো অভিষেক ও তাঁর মূল সাগরেদ তিস্তা সেন। বর্তমানে দমদমে থাকেন। জানা গিয়েছে অভিযুক্তরা বহুদিন ধরেই এই প্রতারণা চালাচ্ছিলেন। পূর্বেও অভিষেক একবার গ্রেপ্তার হয়েছিল এই ধরনের ঘটনায়। পুলিশ সূত্রে এমনটাই খবর। মাঝে কিছুদিন ঠান্ডা থাকলেও অভিষেক
 
 পুনরায় শুরু করে এই নকল টাকা জালিয়াতির কাজ । উল্লেখ্য, এবারে অভিষেকের জালিয়াতির পরিমাণ পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি৷ অত্যাধিক সাহস নিয়ে তাঁরা এই জালিয়াতি চক্র চালিয়েছে৷ 
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিনব পদ্ধতিতে সে জালিয়াতি করত। উপরে কিছু আসল নোট রেখে নিচে অধিকাংশই নকল নোট বা খেলনা নোট সাজিয়ে লোন দেওয়ার গল্প ফেঁদে প্রতারণা চালাত বলে অভিযোগ। বলাবাহুল্য এই প্রতারণা তাঁরা চালাত ভিডিও কলের মাধ্যমে এবং ডিজিটাল ছবি দেখিয়ে। সম্প্রতি এই প্রতারণার শিকার হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালীর বাসিন্দা শুভাশিস আচার্য। ৩০ কোটি টাকা লোন দেওয়ার গল্প ফাঁদে। অত্যন্ত নূন্যতম ইন্টারেস্ট, মাত্র ৪ শতাংশ রেটে লোন দেওয়ার লোভ দেখায় অভিষেক। আর এই লোভের ফাঁদে পা দেয় শুভাষিস আচার্য। প্রথমত, তাঁকে লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ২২ লক্ষ টাকা প্রসেসিং ফিজ নেওয়া হয়। এরপর একটি ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে তাঁকে দেখানো হয় বিশাল অংকের টাকার পরিমান।
আরও পড়ুনঃ প্রেমে পড়ার মত আর কী আছে! 'উনকে আন্দাজ-এ-করম' এর সুরে মাতালেন আইএএস অফিসার, ভিডিও ভাইরালে
খবর অনুযায়ী, তাঁকে জানানো হয় ৩০ কোটি টাকা লোন দেওয়া হবে ৪ শতাংশ ইন্টারেস্ট হারে। এমনকি একই সঙ্গে জানানো হয় 'মনোরঞ্জন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া' নামে কোনও এক ব্যাংক থেকে তাঁকে এই ৩০ কোটি টাকা লোন দেওয়া হবে। কিছুদিন পর শুভাশিস বাবু বুঝতে পারেন তিনি জালিয়াতির ফাঁদে পড়েছেন। তড়িঘড়ি পুলিশের দারস্থ হন। পুলিশকে সমস্তটা জানান। অভিযোগ পেয়ে সন্দেশখালি থানার পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি সহ তৎক্ষণাৎ তদন্তে নামে। প্রাথমিক তদন্তের জেরে গ্রেপ্তার হয় সিরাজউদ্দিন মোল্লা। জানা গিয়েছে তিনি জীবনতলার বাসিন্দা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের কাছে উঠে আসে নানা তথ্য। জালিয়াতির সূত্র ফাঁস হয়।
এরপর একের পর এক নাম সামনে আসে। জানা গিয়েছে, শিয়ালদহতে এক ছাপাখানা থেকে এই নকল নোট ছাপানো হয়। 'দেবতত্তম প্রেস' নামের এক ছাপাখানা থেকে এটি হয় বলে জানা গিয়েছে। এখানেই সিংহভাগ নকল নোট ছাপানো হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এছাড়াও দেবব্রত চক্রবর্তী, যিনি মহেশতলা মির্জানগর এর বাসিন্দা, তাঁর নিজের ছোট ছাপাখানা থেকেও অল্প সংখ্যক নকল নোট ছাপানো হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ তদন্তে নেমে আসল নোট ৫২ হাজার টাকা এবং জাল নোট বা নকল নোট প্রায় ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। জানা গিয়েছে, এছাড়াও আনুমানিক ৭ কোটি ৮ লক্ষ টাকা পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। আপাতত গ্রেপ্তার হয়েছে মোট তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন তিস্তা সেন মহিলা অভিযুক্ত। তবে প্রধান অভিযুক্ত বা নাটের গুরু অভিষেক তিওয়ারী এখনও পলাতক বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
