তীর্থঙ্কর দাস
বর্তমানে ট্রেন,বাস,মেট্রোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অন্যতম ভরসা অ্যাপ ক্যাব। রাত-বিরেতে বাড়ি ফিরতে আমজনতার অন্যতম ভরসা। প্রায়শই দেখা যায়, অ্যাপ ক্যাবে যাতায়াত করতে গিয়ে নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়ে থাকেন মানুষ। সেই ঘটনার কথা শেয়ারও করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু এবার সামনে এল এক সম্পূর্ণ অন্যরকম গল্প। মানুষ এবং পাখির এক অনন্য ভালবাসার গল্প।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলা এলাকাতেই বাস করেন বাসিন্দা সুশান্ত মন্ডল। নিয়মিত অ্যাপ ক্যাব চালিয়েই সংসরা চলে তাঁর। কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় তিনি কখনোই একা থাকেন না। তাঁর সঙ্গ দেয় তাঁর ছোট্ট পোষ্য। কিন্তু সে কুকুর-বিড়াল নয়। সুশান্তর নিত্যদিনের সঙ্গী তাঁর ছোট্ট বুলবুল পাখি ঝটু। গত ছ’মাস ধরে ঝটুর বাসস্থান সুশান্তর কাঁধ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সুশান্ত যতক্ষণ গাড়ি চালান তাঁর কাঁধে বসেই কলকাতা ঘোরে ঝটুও।
আজকাল ডট ইনকে সুশান্ত জানান, ‘ও শুধু একটা পাখি নয়, ও এখন আমার জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। আমি যা খাই, ওকেও তাই খাওয়াই। আমার গাড়িতে যাঁরা উঠেছেন প্রায় সকলেই প্রথমে ওকে দেখে প্রথমে চমকে উঠলেও পরে স্নেহও করেছেন’। গাড়িতে এসি চলুক বা না চলুক, জানলা খোলা থাকুক বা না থাকুক নিজের স্থানে অবিচল সুশান্তর পোষ্য।
সুশান্ত জানান, ‘ছ’মাস আগে আমার স্ত্রী প্রথম ওকে বাড়িতে নিয়ে আসে। কাকের হাত থেকে উদ্ধার করে আমার স্ত্রী ওকে নিয়ে আসে। তারপর থেকে আমার বাড়িতে আমার সঙ্গেই থাকে ঝটু। আমি যতক্ষণ রাস্তায় ডিউটি করি, ও ঠিক পুরোটা সময় আমার সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়’। সুশান্তর কথায়, পাখিটির খিদে পেলে সুশান্তর কানে কামড় বসে। সে জানান দেয় যে তাঁকে খেতে দিতে হবে। মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে প্রিয় পোষ্যকে নিজের হাতে করেই খাইয়ে দেন সুশান্ত। প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ছেলেকে স্কুলে ছাড়ার জন্য গাড়ি নিয়ে বেরোন তিনি। বাড়ি ঢোকেন রাতে। পুরো সময় জুড়েই ঝটু তাঁর একমাত্র সফরসঙ্গী।
