আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিধাননগর পৌর নিগমের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর ও বর্তমানে বিধাননগর আইএনটিটিইউসির সভাপতি নির্মল দত্তের ওপর গুলির চেষ্টায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। সোমবার সকাল সাতটা নাগাদ নিজের ওয়ার্ড অফিসে পৌঁছে তালা খুলতে গিয়েই প্রাণঘাতী হামলার মুখে পড়েন তিনি। অভিযোগ, মুখে মাস্ক পড়া এক দুষ্কৃতী পিছন দিক থেকে এসে হঠাৎই গুলি চালানোর চেষ্টা করে তাঁকে।
মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি বুঝে ফেলেন নির্মলবাবু। তিনি দুষ্কৃতীর হাতে ধরা বন্দুকটি চেপে ধরেন। শুরু হয় তীব্র ধস্তাধস্তি। সেই সময় অভিযুক্ত যুবক বন্দুকের বাট দিয়ে নির্মলবাবুর মাথায় জোরে আঘাত করে বলে জানা গেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। চিৎকার শুনে আশপাশের স্থানীয়রা ছুটে আসতেই দুষ্কৃতী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের তৎপরতায় দ্রুতই বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নির্মল দত্তকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি আপাতত স্থিতিশীল। তবে মাথায় চোট লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: বিয়ের পরেই হাসিখুশি তরুণীর ভয়ঙ্কর পরিণতি! পণের লোভে স্বামী, ননদের কীর্তি জানলে আঁতকে উঠবেন
ঘটনার খবর পেয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। এলাকা জুড়ে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযুক্তের গতিবিধি ও পরিচয় শনাক্তের জন্য। কেন এই হামলা, রাজনৈতিক নাকি ব্যক্তিগত কারণে— তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দিনদুপুরে এমন হামলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিধাননগর জুড়ে। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় বাড়ানো হোক নিরাপত্তা। অন্যদিকে, এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন। প্রশ্ন উঠছে— রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, নাকি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে এই গুলি করার চেষ্টার পেছনে?
স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় আরও নজরদারি বাড়ানো উচিত পুলিশের। সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে অন্য রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের ধরতে বিধাননগরে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ।
সেইসময় বিধাননগরের একাধিক জায়গায় পালিয়ে আসা ভিন রাজ্যের চার দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল গোটা এলাকায়। কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে তিন অভিযুক্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, গোপন সূত্রে খবর আসে গুজরাটের এক অপরাধচক্রের চার সদস্য কলকাতায় আত্মগোপন করে আছে। সেই খবরের সূত্র ধরে অভিযান শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ দল। বিধাননগরের একটি পাঁচ তারা হোটেলের কাছ থেকে প্রথমে দু'জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। কিন্তু বাকি দু'জন পালিয়ে যায়। তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গেই।
অভিযান চলাকালীন জানা যায়, এক অভিযুক্ত পূর্বাচল আবাসনের ক্লাস্টার ফোর-এর ছাদের কার্নিসে লুকিয়ে রয়েছে। পুলিশ সেখানে পৌঁছলে সুযোগ বুঝে সে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর সে দৌড়ে একটি সরকারি আবাসনে ঢুকে পড়ে। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা তার গতিবিধি টের পেয়ে ধাওয়া করে। অবশেষে বেঙ্গল টেনিস অ্যাকাডেমির কাছে তাকে পাকড়াও করে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
