আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুইজারল্যান্ডে এক বিরল চিকিৎসা ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ২০ বছর বয়সী এক যুবক হস্তমৈথুন করতে গিয়ে গুরুতর ফুসফুসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে চিকিৎসকরা জানান, তার ফুসফুস থেকে বাতাস বেরিয়ে গিয়ে বুকের ভেতর ও গলার আশেপাশে আটকে গিয়ে কেলেঙ্কারি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণ বিছানায় শুয়ে আত্মসুখের সময় হঠাৎ বুকের মধ্যে তীব্র ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সুইজারল্যান্ডের উইন্টারথুর ক্যান্টোনাল হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রাথমিক এক্স-রে এবং পরবর্তী সিটি স্ক্যান পরীক্ষায় দেখা যায়, তার ফুসফুসের ভেতর জমে থাকা বাতাস বের হয়ে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে Spontaneous Pneumomediastinum (SPM) নামে পরিচিত।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণত এ ধরনের সমস্যা জোরে কাশি বা অতিরিক্ত শারীরিক চাপে হয়ে থাকে। কিন্তু আত্মসুখের কারণে এমন জটিলতার ঘটনা চিকিৎসা ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল। এই কারণে ঘটনাটি চিকিৎসকদের কাছে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসার অংশ হিসেবে যুবককে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তাকে ব্যথা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয় এবং শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে কোনো বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়নি। এক রাত আইসিইউতে থাকার পর তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। তিন দিনের মাথায় তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
চিকিৎসক দলের বক্তব্য অনুযায়ী, রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও এই ঘটনা দেখিয়ে দেয়, শারীরিক চাপে ফুসফুস থেকে বাতাস বের হয়ে আসা কতটা অস্বাভাবিক এবং বিরল। তাদের ধারণা, আত্মসুখের কারণে সৃষ্ট এ ধরনের ফুসফুসজনিত জটিলতা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটিই প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা হতে পারে।
হস্তমৈথুন মানব জীবনের এক স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় অভ্যাস। সাধারণভাবে এটি নিজের যৌনাঙ্গকে উদ্দীপিত করে যৌনসুখ অর্জনের প্রক্রিয়া। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে হস্তমৈথুনকে ক্ষতিকর বলা হয় না, বরং এটি অনেক সময় মানসিক চাপ কমাতে, ভালো ঘুম আনতে এবং শরীরে জমে থাকা যৌন উত্তেজনা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক মাত্রায় এবং পরিচ্ছন্ন উপায়ে হস্তমৈথুন করলে এতে কোনো শারীরিক ক্ষতি হয় না। তবে অতিরিক্ত বা আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছালে শারীরিক ক্লান্তি, মনোযোগে ঘাটতি কিংবা মানসিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তরুণ বয়সে অনেকেই এ নিয়ে অপরাধবোধে ভোগে, কিন্তু চিকিৎসকরা বারবার বোঝাচ্ছেন, এটি কোনো অসুস্থতা নয় বরং প্রাকৃতিক শারীরিক প্রবৃত্তির অংশ। তাই হস্তমৈথুন নিয়ে সামাজিক ট্যাবু বা ভুল ধারণা দূর করা প্রয়োজন। সুস্থ জীবনযাপনের মতো এটিকেও পরিমিত ও দায়িত্বশীলভাবে দেখা উচিত।
ঘটনাটি একদিকে যতটুকু অদ্ভুত, অন্যদিকে গবেষণার ক্ষেত্রেই এটি একটি বিরল কিন্তু তথ্যবহুল ঘটনা। এটি দেখায়, জীবনের সাধারণ কিছু অভ্যাসও নানারকম অপ্রত্যাশিত রিফ্লেক্স বা ফিজিওলজিক্যাল রেসপন্স ডেকে আনতে পারে।
